admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৮-১৪ ১৭:০০:২৮ || আপডেট: ২০১৭-০৮-১৪ ১৭:০০:২৮
অভিশপ্ত ১৫ আগস্ট
কাইছার হামিদ
৪২ বছর পেরিয়ে রক্তের কালিতে লেখা অভিশপ্ত ১৫ আগস্ট আবার ফিরে এসেছে। ভয়াল কাল রাত। কেঁেদছিল বাংলার আকাশ। ফুঁপিয়ে ছিল বাতাস। কালো ছায়া পড়েছিল বাংলার জমিনে। এমন কেন হল? বৃষ্টিতে নয়, ঝড়ে নয়, প্রিয়জন হারানোর শোকে। এ শোকে প্রকৃতি কেঁদেছিল, মানুষ কাঁদতে পারেনি। ভয়ার্ত বাংলার প্রতিটি ঘরে এসেছিল চাপা দীর্ঘশ্বাস। কি নিষ্ঠুর, কি ভয়াল, কি ভয়ঙ্কর সেই রাত। আজ ৪২ বছর পরও ভুলতে চায়নি, ভুলতে পারবে না বাঙ্গালী জাতি।
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অশ্রুভেজা কলঙ্কময় রাতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী- বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র- শেখ কামাল, শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু পুত্র- শেখ রাসেল দুই পুত্রবধ-ূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালসহ এক সহোদর নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হন। খুনিরা জাতীর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন ছিল বর্ণিল, কণ্ঠে ছিল জাদু। রাজনৈতিক কবি ছিলেন তিনি। তাইতো ৭ মার্চের ভাষণে মহাকাব্য রচিত হয়। রচনা করেছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিজয়ের ইতিহাস। এত কিছুর পরও জীবন দিতে হয়েছে ঘাতকের হাতে।
১৯৭৫ সালের এই কালিমাময় দিনে জাতি হারিয়েছে তার গর্ব, ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একাত্তরের পরাজিত শক্তির ঘৃণা সর্বনাশা চক্রান্তে একদল ঘাতকের পৈশাচিকতার বলি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার-পরিজন। রচিত হয় ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। কিন্তু তাতে তো এমন একজন রাষ্ট্রনায়ককে একটি জাতির হৃদয় থেকে চিরতরে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। তিনি ফিরে আসেন প্রতিটি উৎসবে, আনন্দ-বেদনায়। তিনি যে মৃত্যুঞ্জয়ী। রাজনীতির সঙ্গে সামান্যতম সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও নারী – শিশুও সেদিন রেহাই পায়নি ঘৃণ্য, কাপুরুষ এই ঘাতকচক্রের হাত থেকে। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান কেবল বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা। দিনটি তাই বাঙ্গালীর ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত। আগস্ট মানেই শোক, আগস্ট মানেই শোকে আপ্লুত বাঙ্গালির কান্নাভেজা পরম বেদনা। আগস্ট এলেই শ্রদ্ধায় নত হয়ে আসে বাঙ্গালীর মাথা। ডুকরে কেঁদে ওঠে কৃতজ্ঞ বাঙ্গালী জাতির হৃদয়। চারদিকে কেবলই ¯্রােত নামে শোকস্তব্ধ মানুষের। মানুষ কাঁদে। বেদানাবিধুর হয়ে ওঠে গোটা দেশ, দেশের মানুষ। পিতাহীন দেশে, সঙ্কটে উপনীত বাঙ্গালী তাই এখনও আশ্রয় খোঁজে তাঁরই আদর্শে রেখে যাওয়া কন্যা শেখা হাসিনার পরম ছায়ায়, ভালবাসায়। মুক্তি মেলে মানুষের, তাঁরই স্বপ্নাকাশে। মানুষ যূথবদ্ধ হয়। সম্মিলিত শোক রুপ নেয় শক্তিতে। নতুন করে বেঁচে থাকার নতুন শপথ নেয় বাঙ্গালী। কেননা জীবনের সুখ, স্বস্তি, আরাম, মোহ, অর্থকড়ি; সবকিছু ত্যাগ করার এক মহান মানুষ অবলীলায় বিসর্জন দিতে পারেন নিজের সব চাওয়া-পাওয়া, তার কালজয়ী ইতিহাস রচে গেছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।