চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

লামায় ভেষজ ও মসলাজাত শিল্পের উজ্জল সম্ভাবনা

প্রকাশ: ২০১৭-০৮-১৪ ১৪:৪০:০৪ || আপডেট: ২০১৭-০৮-১৪ ১৪:৪০:০৪

বেলাল আহমদ( বিশেষ)প্রতিনিধি :

বান্দরবানের লামা উপজেলায় ভেষজ ও মসলাজাত কৃষি ভিত্তিক শিল্পের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। সুষ্ঠ রণা বেন, সঠিক মুল্যে বাজারজাত নিশ্চয়তাসহ কোন বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা সংস্থা এগিয়ে আসলে এখানে গড়ে উঠতে পারে কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা। এই অঞ্চলের মাটি, জলবায়ু, জনসংখ্যা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই শিল্পের অনুকুল পরিবেশ রয়েছে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে এই জনপদে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মাতামুহুরীর উর্বর পলিযুক্ত নদীচর, পতিত জমি ও পাহাড়ী ঢালুতে শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদনের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। এই শিল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ১৯৯৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে দু’বছর মেয়াদী পার্বত্য অঞ্চলের দুঃস্থ মহিলাদের মাধ্যমে হলুদ, ধনিয়া গুড়া করে প্যাকেটজাত করণের উপর প্রশিণ প্রদানসহ ২৫ লাখ টাকা করে একটি পাইলট প্রকল্প হাত নেওয়া হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে বর্তমানে এলাকায় মসলাজাত ও ভেষজ শিল্প চালু ও সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে আছে। যার ফলে অতি সম্ভাবনাময় মসলাজাত ও ভেষজ পণ্য চাষের আগ্রহ থাকা সত্বেও এলাকার আদিবাসী ও বাঙ্গালীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপরন্ত আগাম সুযোগ সুবিধা পেয়ে পরিবেশ বিনাশী তামাক উৎপাদনে জড়িয়ে আছে এখানকার ৯০% জনগোষ্ঠী।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই অঞ্চলে আদা, হলুদ,পেঁয়াজ, রশুন, মরিচ, ধনিয়া, এলাচ, সরিষা, তিল, দারচিনি, লবঙ্গ, চাষের ব্যপক সম্ভাবনা আছে। এছাড়া আনারস, পেপে, কলা, কুল, বেল, কমলা, লেবু, লিচু, আঁতাফল, আমড়া, জাম, আম, কাঁঠাল, তরমুজ ইত্যাদি অর্থকরী ফসল উৎপাদনের অনুকূলে ব্যাপক ভূমি ও সুযোগ রয়েছে। সরকারি বেসরকারি যে কোন সংস্থার উদ্যোগে এইসব পণ্য আবাদ প্রকল্প সম্প্রসারিত হলে এ উপজেলার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশীয় মুদ্রা স্বাশ্রয়ের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এই এলাকায় তামাক চাষ ভয়াল বিস্তার ঘটেছে। তামাক কোম্পানীরা ছাড়াও দেশে অনেক বড় বড় শিল্পপতি রয়েছেন, যারা এই এলাকায় একটি হিমাগার স্থাপনের মাধ্যমে মসলা ও ভেষজ পণ্য রণা বেণের নিশ্চয়তা দিতে পারেন। এই ধরণের একটি মহৎ উদ্যোগ পাল্টে দিতে পারে এই জনপদের আর্থসামাজিক প্রোপট, ঘুরিয়ে দিতে পারে লাখ মানুষের ভাগ্যের চাকা।

 

লামা উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যে কোন বিভাগীয় ও জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ সুবিধা থাকায় এই এলাকার কৃষি ভিত্তিক শিল্পকে হাতছানি দিচ্ছে। কর্মসংস্থানহীন পাহাড়ী এই জনপদে বসবাস করছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী। দেশের অন্য এলাকার মত এখানে ঘনবসতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যপকতা নেই। অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, জলোচ্ছাস ও নদীরভাঙ্গন কোনটার ভয় নেই। এখানে মানুষ ও প্রকৃতির মাঝে নেই কোন বিরোধ। এই এলাকায় বিভিন্ন ফলের জুস কারখানা, মৎস্য শিল্প, চা, তুলাসহ কৃষি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার গণদাবী উঠেছে। এখানকার পাহাড় প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ দেশের উদ্যোক্তাদেরকে এই অঞ্চলে শিল্প বিপ্লবের আহবান জানাচ্ছেন,।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *