admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৮-৩০ ০৫:২৭:২৬ || আপডেট: ২০১৭-০৮-৩০ ০৫:২৭:২৬
বীর কন্ঠ ডেক্স: মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে মুসলিম রোহিঙ্গারা। রাতের আঁধারে বিভিন্ন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দলে দলে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন। বিজিবির কড়া নজরদারির মাঝেও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা
বিবিসি প্রকাশিত ভিডিওতে এক রোহিঙ্গা নারী কেঁদে কেঁদে জানাচ্ছেন, তারা সেখানে (রাখাইন) আর ফিরে যেতে চান না। সেখানে ফেরত গেলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের মেরে ফেলবে। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে বিজিবির বাঁধা পেয়ে এভাবে আকুতি জানান এ নারী।
শুক্রবার সকাল থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে বিভিন্ন চিংড়ি প্রজেক্টের পাড়ে অবস্থান নেন। বিজিবি সদস্যরা ওইসব রোহিঙ্গাদের ঘিরে রেখেছেন। রোহিঙ্গাদের কোনোভাবেই বাংলাদেশর ভেতরে ডুকতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিজিবি। রাতে কোনভাবে সীমান্ত পার হতে পারলেও পরবর্তীতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির পক্ষ থেকে।
মিয়ানমারের রাখাইনের সংঘাত ঘিরে কেউ সীমান্তের জিরো লাইন ক্রস করলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা।
ভিডিওটিতে দেখা যায় এক দল রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার জন্য বলছে বিজিবির কিছু সদস্য। দলটিতে অধিকাংশ নারী ও শিশুদের দেখা যায়। ক্রন্দনরত কয়েকজন নারীর মধ্যে একজন বলেন, আমরা যদি দেশে ফেরত যাই, সেখানের আর্মিরা আমাদের মেরে ফেলবে। তারচেয়ে বরং আমাদের আপনারা মেরে ফেলুন নইতো ওদের সাথে মধ্যস্থতা করুন। আমরা সেখানে ফেরত যেতে চাই না।
এদিকে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন, বিজিবি তাদেরকে রাতের মধ্যেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছে। এ ছাড়াও অসংখ্য রোহিঙ্গা নর নারী নো ম্যানস ল্যান্ডে আটকে পড়ে আছেন। সীমান্তে প্রবেশ করাদের মধ্যে স্থানীয়রা খাবার-পানি বিতরণ করলেও নো ম্যানস ল্যান্ডে পৌঁছাতে পারছে না এপারের কেউ। যার কারণে সেখানে আটকে পড়া রোহিঙ্গারা খাদ্য ও পানির সংকটে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা পুলিশ পোস্ট ও সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালালে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ৭৭ রোহিঙ্গা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হন। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা অভিযান শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন নারী-শিশুসহ কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। তবে তাদের প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।