admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-০৭ ২০:০৭:০৪ || আপডেট: ২০১৭-০৯-০৭ ২০:১০:২০
মোহাম্মদ ইলিয়াছ, লোহাগাড়া: চট্টগ্রাম থেকে লোহাগাড়ার চুনতি পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে কমপক্ষে ৪৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। সড়কের দু’পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ যানবাহনের স্ট্যান্ড। সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও স্পিডব্রেকার থাকায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টিসহ বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনা। মহাসড়কের পটিয়ার শান্তির হাট, মুন্সেফ বাজার, থানা মোড়, ডাকবাংলা, বাস স্ট্যান্ড, দোহাজারী বাজার, সাতকানিয়ার কেরানীহাট ও লোহাগাড়ার বটতলীতে প্রায়ই যানজট চরম আকার ধারণ করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির পটিয়া মইজ্জার টেক, পটিয়া-আনোয়ারা ক্রসিং টেক, মনসার টেক, বাদামতল টেক, পটিয়া পোস্ট অফিস টেক, গৈরালার টেক, আঞ্জুরহাট টেক, পটিয়া পোস্ট অফিস টেক, আদালত গেইট মোড়, থানা মোড় ডাকবাংলা মোড়, কমলমুন্সির হাট টেক মিলে ২০টি পয়েন্টে এবং চন্দনাইশ থেকে লোহাগাড়ার চুনতি পর্যন্ত ২০টির অধিক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর শাহ্ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে লোহাগাড়া উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার দূরত্বের ২০টি পয়েন্টে সড়কের দু’পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে গাড়ির স্ট্যান্ড, গ্যারেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর ৯টি পয়েন্টে বসে নিয়মিত হাটবাজার। এ অংশের সড়কে ৪৫টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও ২৭টি স্থানে অপরিকল্পিত স্পিডব্রেকার রয়েছে। ফলে সড়কটিতে রীতিমতো যানজট সৃষ্টিসহ দুর্ঘটনা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- সিএনজি, মাহেন্দ্র, হাইয়েচ, মাইক্রোসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল এবং দোকানপাট সংশ্লিষ্টদেরকে টাকা দিয়ে দু’পাশে রাখার সুযোগ করে দেয়।
গাড়ির চালকরা জানান, মহাসড়কের দু’পাশে এতবেশি বিভিন্ন দোকানপাট, গাড়ির স্ট্যান্ড ও গ্যারেজ গড়ে উঠেছে এবং সড়কটি এত বেশি আঁকাবাঁকা যে, প্রতিনিয়ত অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। চট্টগ্রাম থেকে লোহাগাড়া পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে দেড় ঘণ্টারস্থলে তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়। একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সড়কের দু’পাশে দোকানের মাধ্যমে দৈনিক ও মাসিক ভাড়ার বিনিময়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে একটি মহল। সড়কের ফুটপাত দখল করে ফলের দোকান, চায়ের দোকান, মুচির দোকানসহ বিভিন্ন দোকান গড়ে উঠেছে। সড়কটির পটিয়া, দোহাজারী, কেরানীহাট ও লোহাগাড়ার বটতলীতে এ সকল স্থাপনা বেশি গড়ে উঠেছে।
আরকান সড়ক পরিবহন ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক এতোবেশি আঁকা-বাঁকা যে, অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি চালাতে হয়। দু’পাশে দোকানপাট গড়ে উঠার কারণে যানজট ও দুর্ঘটনা লেগেই আছে। দোহাজারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সড়কের চার লেনের কাজ শুরু হলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো ঠিক করা হবে। সড়কের ফুটপাতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন যান-বাহনের স্ট্যান্ড-গ্যারেজ ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাজ বলে তিনি জানান।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাহবুব আলম জানান, উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বটতলীর ফুটপাত অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট ও বিভিন্ন যানবাহনের গাড়ির স্ট্যান্ড-গ্যারেজের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই সড়কের ফুটপাতে অবস্থানরত যানজট সৃষ্টিকারী বহু বাস-মিনি বাস, মাইক্রো ও সিএনজি টেক্সি‘র বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সূত্র – দৈনিক ইত্তেফাক