admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-২৬ ১১:০৬:৩৯ || আপডেট: ২০১৭-০৯-২৬ ১১:০৮:৪৩
বীর কন্ঠ ডেস্ক : চট্টগ্রাম আদালতে দুই বিচারকের এজলাসে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির জঙ্গিদের বোমা হামলার পৃথক দুটি মামলার রায়ে তিন জঙ্গিকে সাত বছর করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম সাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া এই রায় দেন। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিন জঙ্গি হলেন, জেএমবি চট্টগ্রামের সাবেক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মোহাম্মদ, শাহাদাত আলী ও জেএমবির বোমা তৈরির কারিগর জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান। এর মধ্যে দুজন কারাগারে রয়েছেন। অন্য আসামি জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানকে সাড়ে তিন বছর আগে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় অন্য জঙ্গিরা। এরপর তাঁকে আর গ্রেপ্তার করা যায়নি। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে হাজিরা দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ আদালতে নেওয়ার পথে ত্রিশাল এলাকায় প্রিজন ভ্যানে গুলি ও বোমাবর্ষণ করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই তিনজনের একজন বোমা মিজান। ওই ঘটনায় জঙ্গিদের গুলি ও বোমা বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য মারা যান। আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম আদালতের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনের এজলাসে জেএমবির জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলা চালায়। সেদিন বইয়ের ভেতরে বোমা লুকিয়ে আদালতে এনে প্রায় একই সময়ে ভিন্ন দুটি কক্ষে দুজন বিচারকের এজলাসে তা ছুড়ে মারে জঙ্গিরা। তবে বোমা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় বারবার সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে যায়। ২০০৮ সালের ২৭ জানুয়ারি একসঙ্গে দুটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় সাক্ষী ২৮ জন। অপরদিকে মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় রয়েছেন ২৯ সাক্ষী। এর মধ্যে দুই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৪০ জন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার সাক্ষী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মানিক দত্ত বলেন, সেদিন বিচারক আকরাম হোসেনের আদালতে তিনিও ছিলেন। ছুড়ে মারা বোমাটি তাঁর মাথার ওপর দিয়ে বিচারকের টেবিলের ওপর পড়ে। পরে পুলিশ ও আইনজীবীরা ধাওয়া দিয়ে জঙ্গি শাহাদাতকে ধরে ফেলেন। বোমাটি বিস্ফোরিত হলে এজলাসে থাকা কেউ বাঁচত না। রায় ঘোষণায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করেন। সরকারি কৌঁসুলি সাইফুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, দুই মামলায় তিন জঙ্গিকে সাত বছর করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একজন পলাতক রয়েছেন। এ দিকে রায় ঘোষণার আগে দুই জঙ্গিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।