admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-২৬ ১০:০৩:২৮ || আপডেট: ২০১৭-০৯-২৬ ১০:০৪:৪৬
আন্তর্জাতিক: রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে এক হিন্দু গণকবরের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে মিযানমারের সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ওই গণকবরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ২৮ টি মরদেহ পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী এই ঘটনায় আরাকান আর্মিকে (এআরএসএ) দায়ী করছে। তবে সংগঠনটি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করে বলছে, এটি মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ‘মিথ্যাচার’। এদিকে রাখাইনে সাংবাদিক প্রবেশে বাধানিষেধ থাকায় কোনও সংবাদমাধ্যমের পক্ষে স্বাধীনভাবে এর যাচাইবাছাই করা যায়নি।
মিযানমারের সেনাবাহিনীর ওযবেসাইটে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, উত্তরাঞ্চলীয রাখাইন প্রদেশের একটি গ্রাম থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একটি গণকবর খুঁডে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মোট ২৮টি মরদেহ বের করে এনেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গণকবরে ২৮ হিন্দু গ্রামবাসীর লাশ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে দেশটির সরকারি বাহিনীগুলো।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জা হতায় এএফপিকে জানান, রবিবার পাওয়া এসব লাশের মধ্যে ২০টি নারীদের এবং বাকি আটটি পুরুষ ও শিশুদের। স্থানীয় এক পুলিশ কমকর্তাও এএফপিকে একই তথ্য দিয়েছেন। সরকারের তথ্য কমিটির সরবরাহকƒত ছবিতে দেখা যায়, গণকবরের পাশে মরদেহগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। তবে কোনও সংবাদমাধ্যমের পক্ষেই ছবিগুলো স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করা সম্ভব হয়নি।
মিয়ানমার সরকারের দাবি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক শরণার্থী মিয়ানমারের হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় গ্রাম ইয়ে বাও কিয়ার কাছে তল্লাশি চালানো হয়। সে সময় ওই গণকবরের সন্ধান মেলে। মিয়ানমার সরকারের দাবি অনুযায়ী, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ওই শরণার্থী তাদের জানিয়েছেন, এআরএসএ-র প্রায় ৩০০ জঙ্গি মিলে তাদের গ্রামে প্রবেশ করেছিল। হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ১০০ জনকে ধরে গ্রামের বাইরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে তারা। মিয়ানমার সরকারের এই দাবিটিও কোনও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করতে সক্ষম হয়নি।
ইয়ে বাও কিয়া গ্রামে যেখানে মরদেহগুলো পাওয়া গেছে সেখানে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্পদ্রায়ের মানুষের বসবাস। সেই এলাকার নাম খা মং সেখ। গত সপ্তাহে এই এলাকার হিন্দুরাই এএফপিকে বলেছিল যে, এআরএসএ সদস্যরা ২৫ আগস্ট লাঠি ও ছুরি নিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং সামনে পড়া সবার ওপর আক্রমণ করতে থাকে। হিন্দু নারীদেরও অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছিল।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। তাদের দাবি, তারা বেসামরিকদের ওপর কোনও হামলা চালায় না এবং কোনও হিন্দুকেও হত্যাও করেনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া একটি অডিওবার্তায় ওই মুখপাত্র দাবি করেন, বৌদ্ধ উগ্রবাদীরা হিন্দু-মুসলিম বিভেদ তৈরি করতে চাইছে। এজন্য তারা এআরএসএ সদস্যদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। তিনি বলেন, এআরএসএ অঙ্গীকারবদ্ধ যে কোনও অবস্থাতেই আমরা বেসামরিক ও সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করবো না।