চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

admin

উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রবাহী একটি জাহাজ আটক করেছে মিসরের শুল্ক গোয়েন্দারা

প্রকাশ: ২০১৭-১০-০৬ ০২:৩৯:৪৬ || আপডেট: ২০১৭-১০-০৬ ০২:৩৯:৪৬

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  : উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রবাহী একটি জাহাজ আটক করেছে মিসরের শুল্ক গোয়েন্দারা। কম্বোডিয়ার পতাকাবাহী ওই জাহাজটি গত আগস্টে আটক করা হয় বলে জানায় লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি নিউ আরব। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্র বহনকারী জাহাজটিকে আটক করে মিসরের সেনাবাহিনী।

 

জাহাজটিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র লুকানো ছিল বলে মিসরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। জাহাজে তল্লাশি চালিয়ে ৩০ হাজার রকেট চালিত গ্রেনেড’এর সন্ধান পায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। উত্তর কোরিয়ার তৈরি এসব অস্ত্রের কথা গোপন করে জাহাজটি মিসরের সীমানায় প্রবেশ করে।

 

নিউ ইয়র্ক টাইমস’এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাটি জানায়, জাহাজটিতে রাশিয়ার তৈরি আরপিজি-৭ ক্ষেপণাস্ত্রের উত্তর কোরীয় সংস্করণ মিলেছে। মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব মিলিয়ে আরপিজি-৭’এর ৭৯টি বাক্স জাহাজটিতে পাওয়া গিয়েছে।

 

এই জাহাজ ভর্তি অস্ত্রের চালান আটকের ফলে মিসরের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রের গোপন যোগাযোগের বিষয়টি সামনে এলো। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অস্ত্র তো বটেই.. অনেক বিষয়েই সম্পর্ক রাখতে পারে না সংস্থাভুক্ত দেশগুলো।

 

জাতিসংঘের নির্দেশ উপেক্ষা করে পিয়ংইয়ং পরমাণু কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি আরও বেড়েছে। অস্ত্রের চালান আটকের পর জাতিসংঘ একে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইতিহাসে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্রের চালান আটকের ঘটনা বলে অভিহিত করে।

 

সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই আটকের ঘটনা প্রমাণ করে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়া শুধু অস্ত্রই নির্মাণ করছে না, কখনও কখনও বাণিজ্যের স্বার্থে মজুতও করে।’

 

অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মিসরের অস্ত্র ব্যবসায়ী নেতারা সেনাবাহিনীর জন্য উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ক্রয় বন্ধ করবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের চোখ ফাঁকি দিয়ে হলেও তা বহাল রাখবে বলেই মত বিশ্লেষকদের।

 

একবার উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাতাহ আল সিসি সম্পর্ক বজায় রেখেছে এমন তথ্য পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। একারণে মিসর যাতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে, সেজন্য প্রায় ৩শ মিলিয়ন ডলারের সেনা সহায়তাও পিছিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

 

তবে মিসর সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, কায়রো বরাবরই জাতিসংঘের দেয়া শর্ত মেনে চলে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সেনা সহযোগিতার বিষয়ে কঠোরতা আরোপ হলে সেটাও মেনে নেয়া হবে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ধরনের গোপন অস্ত্র চুক্তির কারণে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি বেগবান হচ্ছে। কেননা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া কিম জন সরকারের জন্য এই অস্ত্র ব্যবসা বড় ধরনের অর্থের যোগান দেয়।

 

এদিকে, উত্তর কোরিয়া অস্ত্রের চালানের বিনিময়ে মিসরের কাছ থেকে ২৩ মিলিয়ন ডলার নিয়েছে কিনা তা পরিস্কার নয়। তবে জাহাজ আটকের পর এটা পরিস্কার মিয়ানমার, ইরান, সিরিয়া, ইরিত্রিয়া এবং কিউবার মতো মিসরও কালো তালিকাভুক্ত হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *