admin
প্রকাশ: ২০১৭-১০-১৬ ০০:৪৭:২৭ || আপডেট: ২০১৭-১০-১৬ ০০:৪৭:২৭
বিশেষ প্রতিনিধি : পার্বত্য বান্দরবান জেলার একমাত্র শিল্পনগরী অাজিজনগরের প্রধান দুটি শিল্প কারখানা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বান্দরবান পার্বত্য জেলার তিনটি শিল্প কারখানা অাজিজ উদ্দীন ইন্ডাষ্ট্রিজ,সাত্তার ম্যাচ ওয়ার্কস ও রয়েল টেক্সটাইল মিল্স অাজিজনগরে অবস্হিত। তাই জেলার একমাত্র শিল্পনগরী হিসেবে খ্যাতি লাভ করে অাজিজনগর। রয়েল টেক্সটাইল মিলটি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রনালয়ের অধীনে দীর্ঘদিন থাকার পর প্রায় ১৮বছর পূর্বে লোহাগাড়ার বিশিষ্ট শিল্পপতি অাবুল কাশেম চৌধুরী শিল্প মন্ত্রনালয় থেকে লিজ নেয়ার পর কারখানা চালু করে। বছর পাঁচেক পর কারখানার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তিতে অাবার ৪/৫বছর পর চালু করা হয় বর্তমানে রয়েল টেক্সটাইল মিলটি স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে চালুরত অবস্হায় অাছে। এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান দুটি শিল্প কারখানার মধ্যে অাজিজউদ্দীন ইন্ডাষ্ট্রিজটি প্রায় ৬বছর ধরে বন্ধ। প্রথমে কয়েকদফায় লে-অফ দেয়ার পর পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি জেলা প্রশাসক, জেলার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও মালিক প্রতিনিধিদের নিয়ে কয়েকদফা বৈঠক করে ও কোন সমাধান হয়নী।
মালিক পক্ষের অভিযোগ শ্রমিক নেতাদের চাঁদাবাজি ও কারখানায় নিয়মিত চাকুরি না করে বেতন উত্তোলন সহ নানা অনিয়ম করে।
পক্ষান্তরে তৎকালীন শ্রমিক নেতারা বলছেন, মালিক পক্ষের একঘুয়েমি অাচরন ও পুরাতন শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মেনে শ্রমিক অাইন বহির্ভূত ভাবে গণহারে ছাটাই করে। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত কারখানাটি ২০১১ সালের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায়।
এ অাগে প্রায় ২০০০ সালের দিকে নানা অযুহাতে ভাইয়াগ্রুপের মালিকানাধীন সাত্তার ম্যাচ ওয়ার্কসটি বন্ধ করে দেয় মালিক পক্ষ ।
বন্ধের পর শ্রমিকরা শিল্পমন্ত্রী,পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর এম,পি, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, অারকান সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। কিন্তু মালিকপক্ষ কারখানা চালু করেনী ।
উল্লেখ্য, কারখানা দু’টি চালু অবস্হায় কয়েকবার বন্ধ করার পায়তারা করলে তৎকালীন সংসদ সদস্য বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর এম,পি কঠোর হস্তক্ষেপে তা পারেনী। পরবর্তীতে বিভিন্ন অযুহাতে কারখানগুলি বন্ধ হয়ে যায়। যার দরুন মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় ১০০০ পরিবার। অনেকে শেষ বয়সে এসে অন্যত্র চাকুরি করার বা যাবার মত সে বয়স না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছেনা। অনেক পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিটির অায়ের খাত বন্ধ হয়ে যাওয়াই পুরো পরিবারে অন্ধকার নেমে অাসে।এমনকি স্কুল,কলেজে পড়ুয়া ছেলে মেয়েকে পড়ানোর সামর্থ না থাকায় বিভিন্ন বাগানে, গার্মেন্টসে কিংবা দৈনিক শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। শিক্ষিত বয়স্ক লোকরা হটাৎ চাকুরি হারিয়ে শেষ বয়সে চোখের জ্বল ফেলে নীরবে কেঁদে কেঁদে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় অনেক মৃত্যুবরণ করেছেন।অার অনেকে খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন।
প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদূর এম,পির নিকট অাবেদন প্রায় পনেরো হাজার অাজিজনগরবাসীর প্রাণের দাবী এ কারখানা দু’টি চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিয়ে, যাতে নিভে যাওয়া প্রদীপগুলো অাবার জ্বলে উঠুক। প্রাণখুলে হাসবে সবাই-সত্যিকার অর্থে অামরা ফিরে পাব শিল্পনগরীর ঐতিহ্য,এ প্রত্যাশা ও দাবি অাজিজনগরবাসীর। অচিরেই বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা দু’টি চালু করা হউক এলাকাবাসীর দাবী।