চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

স্যাটেলাইটের নতুন ছবিতে রাখাইনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

প্রকাশ: ২০১৭-১০-১৭ ১৬:২৯:১৭ || আপডেট: ২০১৭-১০-১৭ ১৬:২৯:১৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

স্যাটেলাইটে ধারণকৃত নতুন ছবিতে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ২৮৮টি গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়ার চিত্র উঠে এসেছে। ২৫ আগস্টের পর থেকে এসব বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে।

 

রোহিঙ্গা মুসলিমদের হাজার হাজার বাড়িঘর, স্থাপনা ধ্বংস করাসহ ধর্ষণ, গণহত্যা ও লুটতরাজ চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা।

 

স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ছবি বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেছে বেছে রোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, তারা কেবল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদেরই টার্গেট করেছে। পরে শুদ্ধি অভিযান বন্ধ ছিল বলেও দাবি তাদের।

 

৫ সেপ্টেম্বরের পর রোহিঙ্গাদের ৬৬টি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সর্বসাধারণের উদ্দেশে শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সু চির ১৮ সেপ্টেম্বর দেয়া বক্তব্যে ওই সময় অভিযান বন্ধ রয়েছে বলে দাবি করেন। রোহিঙ্গা-সঙ্কটে প্রথমবারের মতো মুখ খুলে তিনি ওই দাবি করেন।

 

তবে ২৫ আগস্ট সেনাবাহিনী ও পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের হামলার জেরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবকে পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত গণহত্যার উদাহরণের সঙ্গে তুলনা করে জাতিসংঘ।

 

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা বলছে, ২৫ আগস্টের পর পাঁচ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেছেন, স্যাটেলাইট ধারণকৃত নতুন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কী কারণে মাত্র চার সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী শতাধিক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে; যেখানে হত্যা, ধর্ষণ এবং মানবতাবিরোধী অন্যান্য অপরাধ রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

 

উত্তর রাখাইনের মংডু, রাথিডং এবং বুথিডংয়ে ৮৮৬টি গ্রাম পর্যবেক্ষণ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তবে বেশিরভাগ ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে মংডুতে। ২৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকায় ৯০ শতাংশ গ্রাম ধ্বংস করে দেয়া হয়। মংডু পৌরসভার ৬২ শতাংশ গ্রাম একেবারে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে; শহরতলীর দক্ষিণ এলাকায় জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি।

 

মিয়ানমার সরকারের দাবি, আরসা এবং রোহিঙ্গারা রাখাইন ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তবে তাদের সেই অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শতাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে আরসা কিংবা রোহিঙ্গাদের আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পায়নি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

 

সূত্র : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *