admin
প্রকাশ: ২০১৭-১১-১২ ১৫:০৭:৩৬ || আপডেট: ২০১৭-১১-১২ ১৫:০৭:৩৬
মোহাম্মদ ইলিয়াছ:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ভিক্ষুকরা ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে তাদের ইচ্ছানুযায়ী উপজেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া কাজ করে আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। তাদের অলস হাত পরিণত হচ্ছে কর্মীর হাতে। ইতিমধ্যে ভিক্ষুকরা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলা আধুনগরের ১৭ জন ভিক্ষুকের মধ্যে চারজন ভিক্ষুক ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সংসারের খরচ যোগান দিচ্ছে।
ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে আধুনগর এলাকার মোট ১৭ জন ভিক্ষুককে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ইচ্ছা ও পছন্দানুযায়ী প্রয়োজনীয় মুরগীসহ খাঁচা ও মুরগীর খাদ্য, হাঁসসহ খাঁচা, খাঁচাসহ শুকটি, কুটির শিল্পের কাজা, লাকড়ির ব্যবসা, পান-সুপারির দোকান, চা-চিনিসহ চায়ের সরঞ্জাম ও ভ্যান গাড়িতে রসুন-পিঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রির জন্য পুঁজি দেয়া হয়েছে। যাতে করে ভিক্ষুকরা উক্ত ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা আত্মনির্ভরশীল ও লাভবান হবে।
আধুনগরের নয়াপাড়ার আবদুল মজিদ, সর্দারনী পাড়ার সালেহা বেগম, বড়ুয়া পাড়ার শর্মিলা বড়ুয়া ও নয়াপাড়ার ছেমন খাতুন তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায় লাভবান হচ্ছেন। আবদুল মজিদকে দেয়া হয়েছিল ভ্যান গাড়িতে ফেরি করে পিঁয়াজ-রসুনসহ সবজি বিক্রির পুঁজি, সালেহা বেগমকে বাঁশ-বেত দিয়ে কুটির শিল্প তৈরির পুঁজি, শর্মিলা বড়ুয়াকে শুঁটকি ব্যবসার পুঁজি ও ছেমন খাতুনকে দেয়া হয়েছে লাকড়ি ব্যবসার পুঁজি। আবদুল মজিদের দৈনিক ১০০০ টাকা, সালেহা বেগম ৫০০-৬০০ টাকা, শর্মিলা বড়ুয়া ৪০০-৫০০ টাকা ও ছেমন খাতুন ৪০০-৬০০ টাকা আয় করছে। সালেহা বেগম জানান, তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে ২টি ছাগলও কিনেছেন।
স্বাবলম্বী হওয়া এসব ভিক্ষুকরা জানান, তারা এতাদিন ভিক্ষা করে ভুল করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুব আলম তাদেরকে ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। তাদের অলস হাতকে কর্মীর হাতে রূপান্তরিত করেছেন। এ জন্য তারা ইউএনও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুব আলম জানান, স্বল্প পুঁজিতে অল্প সময়ে এসব ভিক্ষুকের অলসের হাত কর্মীর হাতে রূপান্তর দেশের জন্য অনন্য একটি দৃষ্টান্ত। গত আগস্ট মাসে আধুনগরকে ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। উক্ত এলাকার ১৭ জন ভিক্ষুককে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য পুঁজি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারজন ভিক্ষুক ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সফল হয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলার আধুনগর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। ভিক্ষুকদের সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসার কাজ মনিটরিং করা হচ্ছে। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোকে পর্যায়ক্রমে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।