চট্টগ্রাম, , শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪

Alauddin Lohagara

বিনম্র শ্রদ্ধায় বীর সন্তানদের স্মরণ করেছে জাতি

প্রকাশ: ২০১৭-১২-১৬ ১৯:৫৮:০৮ || আপডেট: ২০১৭-১২-১৬ ১৯:৫৮:০৮

 

নিউজ ডেস্ক :

বিনম্র শ্রদ্ধায় বীর সন্তানদের স্মরণ করেছে জাতি। হাতে লাল সবুজের পতাকা আর রঙ-বেরঙের ফুল, হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে লাখো মানুষ ছুটে যায় স্মৃতিসৌধে। নয়মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। অভ্যুদয় হয় স্বাধীন বাংলাদেশের।

বিজয়ের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শনিবার ভোর ৬টা ৪০মিনিটে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।পরে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। তিনবাহিনীর প্রধান গার্ড অব অনার প্রদান করেন।আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।এরপর মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনীতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, সংসদ সদস্য এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চলে যাওয়ার পর জাতীয় স্মৃতিসৌধু সর্বস্তরের জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর মানুষের ঢল নামে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে।

জাতির বীরদের স্মরণ করতে ছুটে আসেন বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণিপেশার মানুষ। একে একে তারা শ্রদ্ধা জানান। এসময় হাতে হাতে জাতীয় পতাকা, পরনে জাতীয় পতাকা খচিত টিশার্ট-পাঞ্জাবী, লাল সবুজের আকা ব্যানার-ফেস্টুন শোভা পায়। ফুলে ফুলে ভরে যায় স্মৃতিসৌধ।

মহান বিজয় দিবেস জাতির সূর্য সন্তানরে স্মরণে শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বিজয় অর্জনের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এক আকর্ষণীয় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, আধাসামরিক বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভন্ন মন্ত্রণালয় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এবং সশস্ত্রবাহিনীর পৃষ্টপোষকতায় সাভারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ম পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজের প্রধান অতিথি হিসেবে স্যালুট গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্যারেড কমান্ডেন্ট মে. জে. মো. আকবর হোসেনের সঙ্গে একটি খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন ও স্যালুট গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যারেড অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং এসময় তিনি আকাশে বিমানবাহিনীর মহড়াসহ সশস্ত্রবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ ও রেজিমেন্টের বিভিন্ন ধরনের রণকৌশল মহড়া উপভোগ করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিজয় শোভাযাত্রা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এই শোভযাত্রার আয়োজন করে। ধানমনন্ডি ৩২ এ গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয় দিবস উপলক্ষে ১০টাকার স্মারক ডাকটিকেট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড এবং ডাক বিভাগের ইস্যুকৃত একটি স্মারকগ্রন্থ অবমুক্ত করেন।

সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে এই ডাকটিকিট, খাম ও স্মারকগ্রন্থের অবমুক্ত করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন সংস্থা বিজয় দিবসে নানা আয়োজন করে। সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা বিজয় দিবসে শোভযাত্রা আয়োজন এবং শহীদ বেদীতে বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানায়।- পরিবর্তন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *