Alauddin Lohagara
প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৩ ২০:৫৭:০৪ || আপডেট: ২০১৭-১২-২৩ ২০:৫৭:০৪
বীর কন্ঠ ডেস্ক:
টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রাতের অন্ধকারে সাগর পথে উপকূল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ হলেও সাগরপথে নৌকায় করে রোহিঙ্গা আসা বন্ধ হচ্ছে না। ওপাড়ে নৌকায় করে কিছু দালাল চক্রের সদস্যরা নিয়ে আসছে তাদের।
স্থানীয়রা জানায়, নাফনদীর সীমান্তে বিজিবির তৎপরতার কারণে কিছু দালাল চক্রের সদস্যরা নৌকায় করে রোহিঙ্গাদের নয়াপাড়া, সাবরাং, টেকনাফ ও বাহারছড়া ইউনিয়নের সাগর উপকূলীয় পয়েন্ট দিয়ে নিয়ে আসছে।
শুক্রবার রাখাইন থেকে নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে টেকনাফের হারিয়াখালী ত্রাণ কেন্দ্রে আসেন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের নলবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিন।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনিসহ বেশ কয়েকজন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রাণবাজি রেখে পাহাড়ে লুকিয়েছিলেন। কিন্তু খাওয়ার মতো কিছু ছিল না। পানি ছাড়া অন্য কোনো ধরনের খাদ্যসামগ্রী নেই রাখাইনে।
মোহাম্মদ আমিন বলেন, দংখালী চরে তাবু টাঙিয়ে প্রায় ১৫দিন মানবেতর জীবন-যাপন করেছি। পরে বুধবার রাতের আঁধারে নৌকায় করে টেকনাফের খোরের মুখ খাল দিয়ে সাগর পথে ঢুকে পড়ি। বেড়িবাঁধের পাশে একদিন অবস্থান করার পর গতকাল(শুক্রবার) এই ত্রাণকেন্দ্রে চলে এসেছি। আমাদের নৌকায় শিশু, নারী ও পুরুষসহ ১৪জন ছিল।
একই গ্রামের আরেক রোহিঙ্গা আমন উল্লাহ বসতবাড়ি হারানোর পর পালিয়ে পাহাড়ের কিনারায় বসবাস করছিলেন।
‘এতোদিন বাংলাদেশে না এসে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিলাম। কিন্তু এখন আর সেখানে থাকার কোনো সুযোগ নেই। পাশে থাকা পুকুরের পানিও নষ্ট হয়ে যাওয়া চলে আসতে হল।’ বলছিলেন তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে শুক্রবার ৩২ পরিবারে ১৩০ জন রোহিঙ্গা টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালীতে সেনাবাহিনীর ত্রাণকেন্দ্রের আসে।
এখান থেকে তাদের মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ দিয়ে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক বলেন, অনুপ্রবেশকারী প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, সুজি, চিনি, তেল, লবণসহ কিছু জিনিস দিয়ে গাড়িযোগে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে। এখনও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপে এতোদিন সাগরপথে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ ছিল। কিন্তু আবারো কিছু দালাল টাকার বিনিময়ে রাতের আধাঁরে রোহিঙ্গাদের সাগরপথে নৌকায় করে পারাপার করছে।- পরিবর্তন