চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

Alauddin Lohagara

লামাকে বিভক্ত করার প্রতিবাদে রক্ষা পরিষদের সভা ও কর্মসূচী ঘোষণা

প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৩ ২০:২৮:৫৩ || আপডেট: ২০১৭-১২-২৩ ২০:২৯:৫৮

বেলাল আহমদ,বিশেষ প্রতিনিধি :

বান্দরবানের লামা উপজেলাকে ভুয়া আবেদনের মাধ্যমে বিভক্ত করে নতুন আরেকটি উপজেলা গঠণ ও লামা জেলা হওয়ার পরিকল্পনাকে চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করার নীলনকশার বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁতে জরুরী সভা ও সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করেছে “লামা রক্ষা পরিষদ”। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ৪ ঘন্টা ব্যাপী লামা প্রেস ক্লাবের ৩য় তলা মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় লামা উপজেলার সকল স্তরের পেশাজীবি, ব্যবসায়ী, রাজনীতি ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, চাকরীজীবি ও এনজিও কর্মী সহ শতাধিক লোকজন অংশ নেয়। লামা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রিয়দর্শী বড়ুয়া এই জরুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন।

লামা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান বলেন, একটি ভুয়া গণস্বাক্ষরের কপি সংযুক্ত করে গত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ইং লামা উপজেলার আজিজনগর, ফাইতং, সরই ও গজালিয়া ৪টি ইউনিয়নকে নিয়ে সরইকে নতুন উপজেলা করার জন্য আবেদন করেছে একটি মহল। আবেদনে সংযুক্ত গণস্বাক্ষরটি কোন এক রাজনৈতিক দলের বর্ধিত সভার স্বাক্ষরের কপি বলে জানা গেছে। ভুয়া আবেদনে যুক্তিহীনভাবে সরইকে উপজেলা করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। এছাড়া সরই লামা উপজেলার সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া একটি ইউনিয়ন। যেখানে উপজেলা করার মত কোন অবকাঠামোগত সুযোগ নেই এবং উক্ত ইউনিয়নটি উপজেলার একপাশে অবস্থিত। সরই উপজেলা করা হলে একটি পুঁজিবাদী মহল ও পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার লোকজন উপকৃত হবে। ১৯৮৪ সাল থেকে লামাকে জেলা করার দাবি করে আসছে এই অঞ্চলের জনসাধারণ। উপজেলা বিভক্তের মাধ্যমে লামা জেলা হওয়ার সম্ভাবনাকে চিরদিনের জন্য হারাতে হবে বলে তিনি জানান।

গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা বলেন, আমরা সরইকে উপজেলা হিসেবে মানিনা। গজালিয়া, ফাইতং ও আজিজনগ ইউনিয়নের লোকজন এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁবে। প্রয়োজনে মানববন্ধন, হরতাল ও ২৮ ডিসেম্বর জনমত জরিপ সভা বয়কট করবে এই তিন ইউনিয়নের লোকজন। লামাবাসি যা চায় না করে, কার স্বার্থে সরইকে উপজেলা করা হচ্ছে তা জানতে চায় জনসাধারন।

লামা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মো. মামুন মিয়া বলেন, সরই উপজেলা করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে করা আবেদনকারীদের সাথে আমরা আলাপ করেছি। লোকজনের সাথে আলাপকালে জানতে পারি তারা সরই উপজেলা করার আবেদনের এমন কোন কাগজে স্বাক্ষর করেনি। গণস্বাক্ষরটি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সময়ের মিটিংয়ে নেতা কর্মীদের উপস্থিতি স্বাক্ষর। যা সংযুক্ত করে বান্দরবান জেলা প্রশাসক এর নিকট লামাকে বিভক্ত করতে আবেদন করা হয়েছে। ভুয়া আবেদনে কিভাবে একটি উপজেলা বিভক্ত করে প্রশাসন ?

আলোচনা সভার সভাপতি সাংবাদিক প্রিয়দর্শি বড়ুয়া বলেন, আমরা সরই উপজেলা হওয়ার বিরোধীতা করছিনা। তবে গত ৪ দশকের দাবি লামাকে জেলা করে তারপর সরইকে উপজেলা করলে কারো আপত্তি থাকবেনা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সরই পরিষদ চত্বরে জনজরিপ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবেনা। লামাকে বিভক্ত করার অপপ্রয়াসকে ঠেকাতে সভার সকলের মতামতের ভিত্তিতে নিম্মোক্ত কর্মসূচী ঘোষণা করেন। ১. শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) মাইকিং (রবিবারের মানববন্ধন ও স্মারকলিপিকে অবহিতকরণ লক্ষে), ২. রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) লামা উপজেলা পরিষদের সামনে সড়কে সকাল ১০টায় মানববন্ধন ও প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান, ৩. সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় লামা উপজেলা পরিষদের সামনে মুক্তমঞ্চে আলোচনা সভা, ৪. মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) লামা রক্ষা কমিটির প্রতিনিধি টিমের প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত, ৫. বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) অর্ধ দিবস হরতাল ও ৬. বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সমগ্র লামা উপজেলায় পূর্ণদিবস হরতাল। তিনি উক্ত কর্মসূচী গুলো বাস্তবায়নে লামার সর্বস্তরের জনসাধারণের সহায়তা কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *