চট্টগ্রাম, , বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

Alauddin Lohagara

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতন বৈষ্যম্য দূরীকরণে শিক্ষকদের আমরণ অনশন

প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৩ ২৩:৪৪:২৪ || আপডেট: ২০১৭-১২-২৩ ২৩:৪৪:২৪

বীর কন্ঠ ডেস্ক:

বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় দুই ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে বলে এসেছি আমরণ অনশনে ঢাকা যাচ্ছি। দাবি পূরণ না হলে ফেরা হবে না। আমার মৃত্যুতেও যদি দাবি পূরণ হয় তোমরা কাঁদবে না। এ দাবির সঙ্গে শুধু টাকা নয়, সম্মানও জড়িত।’

শনিবার রাত ৯টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতন বৈষ্যম্য দূরীকরণে আমরণ অনশনরত শিক্ষকদের একজন বক্তৃতাকালে এ কথা বলছিলেন। একই সুরে সুর মিলিয়ে উপস্থিত সবাই ম্যারাথন বক্তৃতাকালে জীবন দিয়ে হলেও দাবি পূরণ করে বাড়ি ফেরার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছিলেন।

 

প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে সকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, আলো আধারি পরিবেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দেশের শত শত শিক্ষক অবস্থান করেছে। হঠাৎ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে তাকালে মনে হবে যেন ‘রোহিঙ্গা’ উদ্বাস্তু আশ্রয় কেন্দ্র। কেউ পলিথিন টানিয়ে, কেউ পেপার বিছিয়ে কেউবা মোমবাতি জ্বালিয়ে শুয়ে বসে আছে। তাদের সবার সামনে দুই একটি করে ব্যাগ।

সারাদিনের ক্লান্তিতে অনেকে মাটিতেই গা এলিয়ে দিয়েছেন। কেউবা শীতে জবুথবু হয়ে পাতলা কম্বল কিংবা চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছেন। কেউবা আবার এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করছেন। দুই একজন ভলান্টিয়ার শিক্ষক শহীদ মিনারের মূল বেদিতে যেন জুতা পায়ে কেউ না উঠেন সেদিকে খেয়াল রাখছেন।

 

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক পারুল মণ্ডল রাণী শীতে জবুথবু হয়ে বসেছিলেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, গতকাল বাড়ি থেকে এলাকার অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে এসেছেন। প্রধান শিক্ষকের এক ধাপ নিচের বেতন স্কেল পাওয়ার দাবিতে আমরণ অনশন করতে এসেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন সরকার তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেবেন।

 

পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলা থেকে ৩০ শিক্ষক এসেছেন। দেবিগঞ্জের প্রগতি পাড়া সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়ে ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন ফারুক বসুনিয়া। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন প্রাথমিক শিক্ষকদের জাতীয়করণ করেন তখন প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের বেতনের পার্থক্য মাত্র ১০ টাকা ও বেতন স্কেল এক ধাপ নিচে ছিল। কিন্তু মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময় বেতন স্কেল তিন ধাপ নামিয়ে দেয়া হয়। তাদের দাবি আগের মতো প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপেই যেন তাদের বেতন স্কেল নির্ধারণ হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *