Alauddin Lohagara
প্রকাশ: ২০১৮-০৩-২৪ ০১:৪১:২৮ || আপডেট: ২০১৮-০৩-২৪ ০১:৪১:২৮
বীর কণ্ঠ ডেস্ক :
সাতকানিয়ার টংকাবতী খাল থেকে একটি অসাধু চক্র অবৈধভাবে বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে মাটি ও বালু তোলার ফলে নষ্ট হচ্ছে খালের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে খালের পাড়সহ আশপাশে জমির সেচ ব্যবস্থা। এ ছাড়া, বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে এলাকায় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে— সাতকানিয়ার টংকাবতী খালের চর চট্টগ্রামের সবজিভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। এই চর থেকে বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন শত শত মণ সবজি চট্টগ্রাম শহরসহ আশপাশের এলাকার বাজারে যায়। স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, এভাবে প্রমত্তা টংকাবতী খালের বুক থেকে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটতে থাকলে অচিরেই উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়ারও কয়েকটি গ্রাম টংকাবতী খালে বিলীনের হুমকি বাড়বে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে— সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে প্রমত্তা টংকাবতী খাল। এ খালের উত্তরপাড়ে সাতকানিয়া আর দক্ষিণ পাড়ের এলাকা লোহাগাড়া উপজেলাধীন। দুই পাড়েই বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে সবজির চাষ হয়। কিন্তু কিছু দিন ধরে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা মাওলানা পাড়ার দক্ষিণ পাশে প্রথমে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন ও পরে এক্সকাভেটর দিয়ে বেপরোয়াভাবে মাটি কাটার ফলে খালের পাড়ে মারাত্মক ভাঙনের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকার সবজি চাষি সিরাজুল ইসলাম, কামাল উদ্দিন, মো.শফি, আমিরুল ইসলাম, হারুনর রশিদ জানান— ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলন ও পরে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটার ফলে পানি পেতে সমস্যা হচ্ছে। পানির অভাবে সেচ দিতে না পেরে খালের পাড়ের হাজার হাজার টাকার সবজি ক্ষেত অকালে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া, হুমকির মুখে রয়েছে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার মাওলানাপাড়া, বাহাদীর পাড়া, বারদোনা, জলদাশ পাড়া, সিকদার পাড়া, দাইমার পাড়া, উত্তর জলিলনগর, বনিক পাড়া, চৌধুরী পাড়ার ১০ হাজার অধিবাসীর জীবনযাত্রা। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন করার কারণে টংকাবতী খালের দুই তীর বর্ষা মৌসুমে বারবার ভেঙে যায়।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের সদস্য মো. সেলিম উদ্দিন জানান— টংকাবতী খালের বালু ও মাটি খেকোদের দাপটের কাছে আমি নিজেও অসহায়। মাটি ও বালু পরিবহনের অতিরিক্ত ওজনের ট্রাকের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে মাওলানা পাড়া হতে টংকাবতী সড়কটি এরই মধ্যে বেহাল হয়ে পড়েছে। এদের কারণে এই এলাকার ১০ হাজার অধিবাসী দুর্ভোগে আছে।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন জানান— বালু ও মাটি যারা উত্তোলন করছেন, তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। যারা এখনো মাটি কাটছেন, তাদের ব্যাপারে খবর নেওয়া হবে।- ইত্তেফাক