চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Alauddin Lohagara

গণহত্যাকারীদের মদদ দিয়েছে, মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে তারাও তো সমান অপরাধী    

প্রকাশ: ২০১৮-০৩-২৫ ১৯:০১:৫৪ || আপডেট: ২০১৮-০৩-২৫ ১৯:০৩:০৩

 

বীর কন্ঠ ডেস্ক:

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের যারা মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে মদদ দিয়েছেন, পুরস্কৃত করেছেন তাদেরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের মদদ দিয়েছে, মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে তারাও তো সমান অপরাধী। অপরাধীদের যারা পুরস্কৃত করেছে, তাদেরও সমানভাবে বিচার হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন চায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের কোনো নেতা-নেত্রী, খালেদা জিয়া নিজেই সন্দিহান ৩০ লাখ লোক নাকি মরে নাই। তারা তো নিজেরাই মানুষ খুন করে অভ্যস্ত, তারা তো নিজেরাই মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাদের পক্ষে এটা বলাটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আদৌ তারা বিশ্বাস করে কি-না? আমার সন্দেহ।

তিনি বলেন, প্রত্যেক জায়গায় যারা গণহত্যায় শামিল ছিল তাদের মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা বড়বড় পদ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। এই হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মন্ত্রী বানানো, জিয়াউর রহমানও বানিয়েছিল, আবার খালেদা জিয়াও বানিয়েছিল। তারা আর লোক খুঁজে পায় না। ওই গণহত্যাকারীরাই ছিল তাদের পেয়ারের লোক। কারণ তাদের পেয়ারে পাকিস্তান।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার পর আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। পাকিস্তানের পাসপোর্টসহ বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়েছিল গোলাম আযম, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেই গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে। পাকিস্তানি পাসপোর্ট হাতেই কিন্তু গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে আসে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করে ওই যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি করে দেয় জিয়াউর রহমান।

শেখ হাসিনা বলেন, ইয়াহিয়া খান গণহত্যার হুকুম দেন, মেজর জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ববাংলার গণহত্যার দায়িত্ব দেন। আলবদর, আলশামস, রাজাকার এই বিভিন্ন বাহিনী গড়ে তুলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পথ দেখিয়ে দেয়া হয় আর গণহত্যা চালানো হয়।

পিলখানার ওয়ার্লেসের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ কিন্তু প্রতিরোধ শুরু করে। ২৫ মার্চের গণহত্যার আগে থেকেই কিন্তু তারা গণহত্যা করেছে। আন্দোলনের সময়ও তারা হত্যা করেছে।

 

২৫ মার্চের নির্মম চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাড়ির আশপাশে সব বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ৩২ নম্বরের বাড়িতে আক্রমণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। জাকির খান সাহেব এসে আমাকে, রেহানাকে নিয়ে যান।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন বের হই তখন রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে আমি নিজে দেখেছি। ধানমন্ডি, মিরপুর রোড থেকে শুরু করে ঢাকা শহরে শুধু লাশ আর লাশ। বস্তিতে আগুন দিয়েছিল, মানুষের চিৎকার আর দাউ দাউ করা আগুন। সমস্ত জায়গায় বাড়িতে বাড়িতে ছিল বাংলাদেশের পতাকা, যে বাড়িতে পতাকা দেখেছে সে বাড়িতেই হামলা করেছে।

 

তিনি বলেন, ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে পুরো ৯টা মাস গণহত্যা চালিয়েছে। আত্মসমর্পণ করার আগে আমাদের আটক করা হয়। মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার পর অনেকেই ভেবেছিল আমরা বুঝি মুক্ত হয়ে গেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা তৎকালীন বিশ্বের সমস্ত মিডিয়াতে এসেছে। অল্প সময়ে এত মানুষ হত্যা এ রকম গণহত্যা কিন্তু আর কোনো দেশে ঘটে নাই। সেই গণহত্যা গ্রিনিজ বুক অব রেকর্ডেও উঠে এসেছে। এটা ছিল সব থেকে ভয়াবহ, মারাত্মক এবং অধিক সংখ্যার গণহত্যা। ইউটিউবে গিয়ে যদি সার্চ করা যায় অনেক তথ্য এখন পাওয়া যায়। পৃথিবীর এমন কোনো পত্রিকা নাই যেখানে এই গণহত্যার কথা ওঠে নাই।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।- জাগো নিউজ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *