চট্টগ্রাম, , রোববার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

admin

শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতে শিক্ষকদের আন্তরিকতার বিকল্প নেই

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-৩১ ২২:৪২:১৩ || আপডেট: ২০১৮-০৭-৩১ ২২:৪২:১৩

আবদুল হাকিম রানা, বীর কন্ঠ : 

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদের বলেছেন, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতে শিক্ষকদের আরো অন্তরিক হতে হবে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরী করতে হবে যাবে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার জন্য উদগ্রীব থাকে। তিনি ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পুরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত না নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধ করেন। তিনি ৩১ জুলাই পটিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) পটিয়ার সহযোগি সংগঠন স্বজন গ্রুপ উক্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। দুপুর বারটায় অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। সনাক সভাপতি অ্যাডভোকেট কবিশেখর নাথ এর সভাপতিত্বে ও টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মো: জসিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: মাইনুদ্দিন মজুমদার। সভায় সনাক-টিআইবি’র পক্ষ থেকে পটিয়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যা নিয়ে মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা প্রদান করেন সনাক সদস্য অধ্যক্ষ মু. আবু তৈয়ব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বজন সমন্বয়ক মো: নুরুল ইসলাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, আবু রিদুয়ান মো: এরফান, মিজানুর রহমান, মো: শরিফুল ইসলাম, মৌলানা আবদুল মাবুদ, পার্থ সারথী সাহা প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সনাক সহ-সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মিত্র, সদস্য আবদুর রাজ্জাক, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বাবুল কান্তি দে, সাংবাদিক আবদুল হাকিম রানা প্রমুখ। সভায় সনাকের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮টি সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। উল্লেখযোগ্য সমস্যা গুলো হলো- ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে কমিটি ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ, প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়মিত প্রকাশ না করা, নিম্নমানের সহায়ক বই পাঠ্য করা, শ্রেণি কার্যক্রমের সময় শিক্ষকদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া, ভালো শিÿক ও শিক্ষার্থীর জন্য প্রণোদনামূলক নীতিমালা না থাকা, শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষক স্বল্পতা, নন এমপিওভুক্ত/খন্ডকালীন শিক্ষকের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, অভিভাবক সমাবেশ নিয়মিত না করা, শিক্ষা উপকরণ ব্যবহারে আন্তরিকতার অভাব, আগমন ও প্রস্থানের নির্র্ধারিত সময়ের ব্যাপারে শিক্ষকগণ সচেতন না থাকা, পরিচালনা কমিটির সভা নিয়মিত না হওয়া ইত্যাদি। সভায় এসব সমস্যা সমাধানে সনাকের পক্ষ থেকে সতেরটি সুপারিশ পেশ করা হয়। উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো- পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে কমিটি ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা; প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়মিত প্রকাশ করা; নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ করা; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষকদের আগমন ও প্রস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করা; ভর্তি ও পরীক্ষার ফরম পুরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করা; অভিভাবক ফোরাম গঠন করা এবং তা কার্যকর করা; ভালো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য প্রণোদনামূলক কর্মসূচির ব্যবস্থা রাখা; শ্রেণি কার্যক্রমের সময় শিক্ষকদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা; শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে সহায়ক সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা; শিক্ষা উপকরণ ব্যবহারে আন্তরিক হওয়া; সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বেতন বৈষম্য দূর করা; দলীয় প্রভাবমুক্ত পরিচালনা কমিটি গঠন করা এবং কমিটির সভা নিয়মিত করা; শিক্ষার্থী অনুপাতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া এবং শিক্ষকদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। সভায় উপজেলা মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল মাদ্রাসার ৭৪ জন প্রধান শিক্ষ ও সুপার অংশগ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *