চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

সৌদি প্রবাসীদের অাকামা পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছে

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-৩১ ২৩:২৪:২৪ || আপডেট: ২০১৮-০৭-৩১ ২৩:২৪:২৪

খলিল চৌধুরী, সৌদিআরব.

সৌদিআরবে প্রবাসীদের অাকামার পেশা পরিবর্তনের সুযোগ পেলেও, বিনিয়োগকৃত লাখ লাখ টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। চশমা, ঘড়ি, তৈরি পোষাক ও খুচরা যন্ত্রাংশের মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের। সৌদি সরকার এই খাতগুলোতে প্রবাসীদের ব্যবসা ও চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় এ নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তারা।

দীর্ঘ ১২ বছর সৌদিতে ব্যবসা করছেন গাজীপুরের প্রবাসী মোহাম্মদ গুলজার মোল্লা। শুরুতে সৌদি নাগরিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও, পরে নিজ কর্মদক্ষতায় চীনের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সৌদিতে কয়েক লাখ রিয়াল বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু চলতি বছর সৌদি সরকার এ ব্যবসায় বিদেশিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে ব্যবসার মূলধনসহ পুঁজি হারানোর শঙ্কা করছেন তিনি।

একই ধরনের ব্যবসা করছেন নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার নজরুল ইসলাম মানিক। সৌদি সরকারের এমন সিদ্ধান্তে তিনিও চরম হতাশায় ভুগছেন।

এছাড়া বিদেশিদের জন্য নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তৈরি পোষাক, ঘড়ি, মুদি দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়। এ অবস্থায় পেশা পরিবর্তনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবেনা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট প্রবাসী ব্যবসায়ীরা।

এদিকে সাম্প্রতিক সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ্ প্রবাসী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি পেশা পরিবর্তনের বিষয়টি দেশটির অভ্যন্তরীন সিদ্ধান্ত হওয়ায় কোন মন্তব্য করেননি। তবে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানান।রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব থেকে আগের বছরের তুলনায় গত অর্থ বছরে প্রায় চল্লিশ কোটি মার্কিন ডলার বেশি অর্থ পঠিয়েছেন সৌদিতে বসবারত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ২২ জুলাই থেকে তাদের কর্মীদের পেশা পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে আকামা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণের কথা বলা হয়েছে, যা আগামী হিজরি সালের শুরু (সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি) থেকে কার্যকর হবে।আকামা পরিবর্তন করতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব অকুপেশন্সের মান অনুসরণ করে এই আকামা পরিবর্তন করতে হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালেদ আব আল খলিল।

যারা এই নিয়ম (ম্যাট্রিক্স সিস্টেম) ও শ্রমনীতি অনুসরণ করবে না, তারা আকামা পরিবর্তনের সুযোগ পাবে না বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

সৌদি গেজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে আকামা পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হওয়ার আগের তিন বছরে ৮ লাখেরও বেশি প্রবাসী তাদের পেশা পরিবর্তনের সুযোগ নিয়েছিল। পরে সেই সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর থেকেই পেশা পরিবর্তনকারী প্রবাসীকে শনাক্ত করে তাদের ২৫ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হচ্ছিল।

এদিকে সৌদি সরকারের নতুন এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এটিকে বড় ধরনের সুযোগ হিসেবে দেখছেন তারা।

উল্লেখ্য, তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে প্রবাসীকর্মীদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশই বাংলাদেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *