admin
প্রকাশ: ২০১৮-০৮-০৬ ২৩:৩৭:৩৮ || আপডেট: ২০১৮-০৮-০৬ ২৩:৩৭:৩৮
আব্বাস হোসাইন আফতাব, রাঙ্গুনিয়া :
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠেছে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদ ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় নারী ও শিশু ওয়ার্ডের ১২ টি বৈদ্যুতিক পাখা খুলে ফেলা হয়েছে। গরমে হাঁসফাঁস করছে নারী ও শিশু ওয়ার্ডের রোগী ও স্বজনরা। দীর্ঘদিন ধরে অবেদনবিদ না থাকায় হাসপাতালে অপারেশন হচ্ছেনা। এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে , অপারেটর পদও খালি। হাসপাতাল কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রোববার (৫ আগস্ট) বিকেল ৩ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, “ ভবনের ২য় তলায় নারী ও শিশু ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অনেক বেডে বৈদ্যুতিক পাখা না থাকায় রোগীর স্বজনরা তীব্র গরম সহ্য করতে না পেরে হাতপাখা ব্যবহার করছেন। ”
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোমিনুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, “ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ২০ কক্ষে নারী, শিশু, ল্যাবরেটরী , জরুরী বিভাগ ও প্রশাসণিক ভবনের কক্ষগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ন। এসব কক্ষের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন পলেস্তরা খসে পড়ছে। কিছুদিন আগে নারী ওয়ার্ডের ছাদের একটি বৈদ্যুতিক পাখা খুলে পড়ে যায়। তবে কেউ আহত হননি। ছাদের রড ও প্রলেপের টেম্পার চলে গেছে। নিরাপত্তার জন্য দুটি ওয়ার্ডের ১২ টি বৈদ্যুতিক পাখা খুলে ফেলা হয়েছে। ”
নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোজী আকতার বলেন, “ শনিবার রাতে তিনি পেট ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। তার বেডে বৈদ্যুতিক পাখা না থাকায় তার অসহ্য লাগছে। পরে তিনি বাড়ি থেকে টেবিল ফ্যান এনেছেন। ”
সরফভাটা এলাকার নাজমা আকতার বলেন, “তার শিশু পুত্র সিফাত শ^াস কষ্টে ভুগছেন শনিবার রাতে তিনি তার পুত্রকে নিয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। ফ্যান না থাকায় বাচ্চাকে বেডে রাখতে পারছিনা । কান্নকাটি করার কারনে তাকে নিয়ে পায়চারি করতে হচ্ছে।’
একই ওয়ার্ডের কোদালা এলাকার রোখসানা বেগম ফ্যান না থাকায় হাতপাখা ব্যবহার করছেন।
হাসপাতাল কার্যালয় সূত্র জানায়, হাসপাতালে ২১ পদের বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছে ১৩ জন। ৮ চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে। সংযুক্তিতে রয়েছেন গাইনি ও শিশু রোগের দুই চিকিৎসক। তাঁরা সপ্তাহে ১ দিন আসেন। রোববার চিকিৎসক এসেছেন মাত্র ৬ জন। বিকেল ৩ টা পর্যন্ত পুরুষ ওয়ার্ডে ১৭ জন, নারী ওয়ার্ডে ২৩ জন ও শিশু ওয়ার্ডে ২৫ জনসহ ৬৫ জন রোগী ভর্তি আছেন।
অপারেশন থিয়েটার ও সরঞ্জামাদি থাকলেও অবেদনবিদ না থাকায় বছরের পর বছর এই হাসপাতালে কোনো অপারেশন হচ্ছেনা। হৃদরোগ , নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ পদ শূণ্য । চিকিৎসক থাকলেও ডেন্টাল ইউনিট নষ্ট থাকায় দন্ত রোগের চিকিৎসা হচ্ছেনা দীর্ঘদিন ধরে।
১৯৬৫ সালে ৩১ শয্যা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মিত হয়। ১৯৯৬ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০৬ সালে এই ক্যাম্পাসে নতুন ভবন নির্মিত হয়। ভবনের ২য় তলায় পুরুষ ওয়ার্ড, অপারেশন থিয়েটার, নিচতলায় ফার্মেসী ও বর্হিবিভাগের চিকিৎসা চলে।