চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

admin

চন্দ্রঘোনায় আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে তালা ঝুলিয়েছে স্থানীয়রা 

প্রকাশ: ২০১৮-০৮-১১ ০০:০৬:১৩ || আপডেট: ২০১৮-০৮-১১ ০০:০৬:১৩

আব্বাস হোসাইন আফতাব, রাঙ্গুনিয়া  প্রতিনিধি :

রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে আবাসিক হোটেল ব্যবসার নামে তিনটি বোর্ডিংয়ে মিনি পতিতালয় খুলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। আবাসিক হোটেল ব্যবসার নামে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান ও দোভাষী বাজার এলাকার কয়েকটি বোর্ডিংয়ে মিনি পতিতাালয় খুলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসলেও পুলিশ স্থানীয় প্রশাসন কুম্ভকর্ণের ঘুমে মগ্ন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা। এসব বন্ধে প্রশাসনের কোন পর্যায় থেকে উদ্যোগ না নেয়ায় স্থানীয় আলেম ওলামারা জোটবদ্ধ হয়ে শুক্রবার (১০ আগস্ট) তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বোর্ডিং তিনটিতে। ইউনুচের মালিকানাধীন ভাই ভাই বোর্ডিং, আবছারের মালিকানাধীন মেঘনা বোর্ডিং ও আজহারুলের বোর্ডিং তিনটিতে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কর্মকান্ড চলে আসায় স্থানীয় চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ও লিচুবাগান ব্যবসায়ি সমিতির নেতারা কয়েকদফা হাতেনাতে ধরে মুচলেখা নিলেও অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে বোর্ডিং তিনটির মালিকদের অবৈধ কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখা যায়নি। লিচুবাগান মসজিদ সংলগ্ন অভিযুক্ত বোর্ডিং তিনটিতে রাতদিন সমানতালে অবৈধ কর্মকান্ড চললেও যেন দেখার কেউ নেই। প্রকাশ্যে এধরণের কর্মকান্ডে স্থানীয় মুসল্লি ও আলেমদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। গত সপ্তাহেও আলেম-ওলামারা সংগঠিত হয়ে ভাই ভাই বোর্ডিংয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় এক পতিতা ও খদ্দেরকে আটক করেন। এসময় আর কখনো এধরণের কাজ করবেননা বলে ব্যবসায়ি সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে এমন মুচলেখা দেন বোর্ডিংয়ের মালিক ইউনুচ। এরপর পতিতা ও খদ্দেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। মুচলেখা দিলেও পরদিন থেকে একই কর্মকান্ড চলছে বোর্ডিং গুলোতে। এর আগে গত মার্চ মাসে চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর ব্যবসায়ি নেতাদের নিয়ে বোর্ডিং গুলোতে তালা ঝুলিয়েছিল। ইউপি চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়িদের কাছে বারবার স্ট্যাম্পে মুচলেখা দিলেও বোর্ডিং মালিকরা ঠিকই আড়ালে আবডালে তাদের অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যান।

স্থানীয়রা জানায়, উত্তর চট্রগ্রামের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে তিনটি বোর্ডিংয়ে দীর্ঘদিন যাবত মাদক বিক্রি, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়, অনৈতিক কর্মকান্ড বেপারোয়া ভাবে চালিয়ে আসছে। ভাই ভাই বোর্ডিং, মেঘনা বোর্ডিং ও আজহারুল বোডিংয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে স্থানীয়রা একাধিকবার চেষ্ঠা চালিয়েও ব্যর্থ হয়। গতকাল আলেম সমাজ ও ব্যবসায়ি নেতারা তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

লিচুবাগান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো হারুন সওদাগর জানান. দীর্ঘদিন যাবৎ অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে বোর্ডিং নামের মিনি পতিতালয় গুলো। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ ড. হাছান মাহমুদকে জানালে তিনি এসব বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে বলেছেন। বোর্ডিংয়ে অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে আলেম ওলামা ও ব্যবসায়িরা শুক্রবার (১০ আগস্ট) আছর নামাজের পর লিচুবাগান ব্যবসায়ি সমিতি কার্যালয়ের সামনে সমিতির সভাপতি হারুন সওদাগরের সভাপতিত্বে প্র্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সরফভাটা মেহেরিয়া মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ ইছহাক নুর। বক্তব্য রাখেন চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হক, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক, আবদুল মালেক, গাজী মো এনাম, লিচুবাগান ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মো. নাছির, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল হামিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক শাহেদুল হক, রাইখালী মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নুরুল আজিম, চন্দ্রঘোনা ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা হাবিবুল্লাহ রব্বানি, মাওলানা মুবিনুল হক, নাজমুল হোসেন, ইউছুপ জেহাদী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সহসভাপতি আবু মনছুর, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে আলেম ওলামা ও ব্যবসায়ি নেতারা গিয়ে বোর্ডিং তিনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন। হোটেলগুলো পুনরায় চালু করার চেষ্টা করলে এসব মিনি পতিতালয় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বিক্ষুদ্ধরা। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঁঞা বলেন, লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ না দিলেও স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে কয়েকবার বোর্ডিং গুলোতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সে সময়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এরপরও পুলিশের নজর রয়েছে এসব বোর্ডিংয়ে। যেকোন ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ড কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *