শংকর চৌধুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৮-০৯-০২ ১৬:৪৯:৪৭ || আপডেট: ২০১৮-০৯-০২ ১৬:৫২:৪৮
শংকর চৌধুরী,খাগড়াছড়ি॥
জগত প্রতিপালক ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৪৪তম শুভ জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে বর্ণীল আয়োজন। সনাতন-হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য পরম পুরুষ ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মদিন জন্মাষ্টমী। খাগড়াছড়িতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে।
ক
রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ জেলা শাখার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গণে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন,পবিত্র গীতা পাঠ,জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন শেষে আলোচনা সভার মাধ্যমে বর্ণীল এই অনুষ্টানের শুভ উদ্বোধন করেন, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) ও কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি তপন কান্তি দে’র সভাপতিত্বে অনুষ্টিত আলোচনা সভায়, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা প্রচার সংঘের আহবায়ক প্রভাত তালুকদারের সঞ্চালনায় খাগড়াছড়ির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক,এনএফ ডব্লিউ সি,পিএসসি, জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহম্মদ খান, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরী, সনাতন সমাজ কল্যান পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি এড. বিধান কানুনগো পিপি,পৌর সভার পেনেল মেয়র কাউন্সিলর পরিমল দেবনাথ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য,আশীষ ভট্টাচার্য্য, শ্রীশ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দেব, সনাতন ছাত্র-যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য ও চন্দন কুমার দে প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, মানুষের মতভিন্ন কিন্তু ভগবান,আল্লাহ বা ঈশ্বর তাকে যে নামে ডাকিনা কেন তিনি এক এবং অভিন্ন। জগতের সকল কিছুর ‘সৃষ্টিকর্তা’ একজনই। হিন্দু ধর্মের পুরান মতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। জগতে পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রিথীবিতে আবির্ভাব ঘটে। দুষ্টের দমন সৃষ্টের পালনে এভাবেই যুগে যুগে ভগবান মানুষের মাঝে নেমে আসেন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন। পরম পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের অহিংসা অমৃত বাণী হৃদয়ে ধারন করে সকলে মিলেমিশে সহবস্থান করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিল। যে উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য (অসাম্প্রদায়িক দেশ) তা বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তায় বর্তমান সরকারের যে ভিশন তা বাস্তবায়নে সকল প্রকার জাতিভেদ হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে সবাইকে কাঁধে কাঁধ রেখে সহবস্থানে বসবাস করার আহবান জানান বক্তারা।
পরে, বেলুন ও শান্তির পায়রা কবুতর উড়িয়ে বর্ণাঢ্য এক মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের শাপ্লা চত্ত্বর,চেঙ্গীস্কোয়ার ও কোর্ট চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে, শ্রীশ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বী ত্রিপুরা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজারো নর-নারী,মন্দিরের পুরোহিতসহ ধর্মীয় ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করেন।