চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

শংকর চৌধুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি

খাগড়াছড়িতে শারদীয় দূর্গোৎসব কমিটি গঠিত : সভাপতি স্বপন চৌধুরী-সাধারণ সম্পাদক প্রভাত তালুকদার

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-০৮ ২২:৫৪:০৪ || আপডেট: ২০১৮-০৯-০৮ ২২:৫৪:০৪

শংকর চৌধুরী,খাগড়াছড়ি॥

শরৎ মানে নদীতীরে সাদা কাশফুলের ঢেউ। শরৎ মানে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। শরৎ মানেই সনাতন সম্প্রদায়ের কাছে মাতৃসম দুর্গতিনাশিনী, দশভূজা দেবী বিশ্ব মাতা, বিশ্ব জননী, মা দুর্গার আগমনী বার্তা।

ষষ্ঠী তিথিতে দেবী বন্দনার মধ্যদিয়ে শুরু হয় সনাতন-হিন্দু ধর্মবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। তখন ‘আনন্দময়ী’ দেবী দুর্গার আগমনী গানে মুখরিত হয়ে উঠে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ি। হিন্দু শাস্ত্র মতে, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন। সন্তানদের নিয়ে পক্ষকাল পিতার গৃহে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। শুক্লপক্ষে এই ১৫টি দিন দেবীপক্ষ,মর্ত্যলোকে উৎসব।

শারদীয় দুর্গা উৎসব যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষে, শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে অপরুপ সৌন্দর্যের লীলা ভূমি পাহাড় রাণী খাগড়াছড়ির শতবর্শী ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় শ্রীশ্রী লক্ষীনারায়ন মন্দিরে এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে। এতে জেলা সদরের ২নং গড়গজ্জ্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন চৌধুরীকে সভাপতি,বাংলাদেশ গীতা শিক্ষা কমিটি (বাগীশিক) জেলা আহবায়ক প্রভাত তালুক দারকে সাধারণ সম্পাদক ও সনাতন সমাজ কল্যান পরিষদের কেন্দ্রি সহ-সভাপতি বিমল দেবনাথকে অর্থ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট শারদীয় দুর্গা উৎসব ২০১৮ইং উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত আলোচন সভায়, শ্রীশ্রী লক্ষীনারায়ন মন্দির পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা মনোরঞ্জন দেব, সাধারণ সম্পাদক নির্মল দেব, সদস্য সজল কান্তি দে, বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি তপন কান্তি দে, সনাতন ছাত্র-যুব পরিষদের কেন্দ্রিয় সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক শেখর শেন, সনাতন সমাজ কল্যান পরিষদ সদর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন আচার্য্যসহ বিভিন্ন মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় শ্রীশ্রী সার্বজনীন রাস মহোৎসব ২০১৮ইং উদযাপন কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এ উৎসবে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে পাহাড়ে বসবাসরত সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অংশ নেয় বলে এখানে শারদীয় দুর্গাপূজা সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়। এতে দুর্গার মাতৃরূপের বন্দনা অসাম্প্রদায়িক উৎসবের রূপ পায়। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করতেই যেন এ উৎসব এখন ‘শারদ উৎসব’ নামেও পরিচিতি পাচ্ছে।

মনব জীবনে দুঃখের যেমন শেষ নেই, তেমনি শাশ্বত আনন্দের উপলক্ষেরও কমতি নেই। শারদ উৎসব বাঙালির ঐতিহ্য ও পরম্পরা বহন করে চলেছে।

শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে সাহিত্য-সাময়িকী প্রকাশের প্রচলন। এখন পূজার পোশাকে এসেছে নানা বৈচিত্র। এর বাইরেও বাঙালিরা নানা আয়োজনে পূজার সময়টুকু নিজেদের এক সূত্রে বেঁধে রাখেন। শারদ উৎসবের শুভলগ্নে আবেগ আর সম্প্রীতির গভীর মিলনমেলার প্রতীক্ষায় পাহাড় আর পুরো বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *