চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

এস. এম. রাশেদ চন্দনাইশ প্রতিনিধি

দোহাজারীতে সংঘর্ষ : পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত ৩০, গ্রেফতার ৯

প্রকাশ: ২০১৮-১০-২৩ ১৫:৪১:০৯ || আপডেট: ২০১৮-১০-২৩ ১৫:৪১:০৯

চন্দনাইশ প্রতিনিধি: চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় গত ২২ অক্টোবর সোমবার রাত ৮টা উ­ল্লাপাড়া ও বার্মা কলোনী দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত উভয় পক্ষের ৩০জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্য পুলিশসহ ১১জন দোহাজারী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়। তৎমধ্য গুরুত্বর আহত দোহাজারী উল্লাহ পাড়ার নুরুল হকের ছেলে সাইফুল (৩৫)কে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

সংঘর্ষ চলাকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারী এলাকায় প্রায় ২ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে দূর্ভোগে পড়ে দুরপাল­ার যাত্রীরা। পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৩/২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ঘটনার সময় কতিপয় দুস্কৃতিকারীরা কয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এতে প্রায় ২০লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা জানান।

ঘটনার পর রাতে সাড়শি অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করেলেও যাচাই বাছাই করে কয়েজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর বার্মা কলোনীর জসীমের মুদি ও ইজিলোডের দোকান চুরি হয়। এ ঘটনায় ১৮ অক্টোবর জসীম বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের রেশ ধরে ওইদিন বিকালে উল­াপাড়া ও বার্মা কলোনীর দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ১২জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে বার্মা কলোনীর মাসেক (১৬) নামে একজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছিল। এঘটনার জের ধরে কয়েকদিন ধরে দু’গ্র“পের উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

গত ২২ অক্টোবর রাত ৮টায় তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। দোহাজারী সদর উল­াহ পাড়ার লোকজন লোহারলড, দা, কিরিচসহ বার্মা কলোনীতে হামলা চালিয়ে আসকর খান বাবুর মাছের আড়ৎ, অটোরিক্সা গ্যারেজ,নুর আলমের চায়ের দোকান,সাহাবউদ্দীনের কম্পিউটারের দোকান, কালামের বিস্কুটের গুদামসহ প্রায় ২০/২৫টি বাসা ও দোকান ভাংচুর করে বলে জানা যায়। পরে বার্মা কলোনীর লোকজন সংগঠিত হয়ে লোহারলড, দা, কিরিচ, হকিষ্টিক নিয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে দোহাজারী বাস ষ্টেশনের শানে ষ্টোর পারভেজ, আমজাদ, আবদুর রশিদ, বেলাল, নাছির, হাজারী টাওয়ারের পাশে পেঠান, আহমদ হোসেন, ইসমাঈল, সোলায়মান, আবদুল আজিজ, ও আবদুস ছমদে ফলের দোকান, ওয়ালটনের শো-রুমের গ্লাস ভাংচুর, এবং সুভাষ ও রানার ঘড়ির দোকান, নাজিমের জুতার দোকান,হেলাল, জাফর ও হাবিবের পানের দোকানে ভাংচুর চালিয়ে নগদ টাকা ও বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এতে ব্যবসায়ীদের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা দাবী করেন। সংঘর্ষের সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উভয় পাশের শত শত দুরপাল­ার যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রী সাধারণের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে দোহাজারী তদন্ত কেন্দ্র ও চন্দনাইশ থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন পুলিশ বেশ কয়েকরাউন্ড ফাঁকাগুলি ও ছরড়া গুলি বর্ষণ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

সংঘর্ষে আহতরা হলো- সাইফুল (৩৫) তানভীর (১০),সাকিব (১৯), আনোয়ার হোসেন (৩০) মোহাঃ আসিফ (১৮), রফিকুল ইসলাম (২০), আরিফ (১৮), নুর আলী (২৫),ফরহাদ (২২), আলমগীর (২৫), নুরু (২৩), পারভেজ (১৮), মুন্না (২৫), খোকন (২০), শাকিল (১৮), লাখি (৩৫), পিংকি (৩০), লিটন (৩৫), হাসিনা (২৫), মুন্নি (৩০), দোহাজারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ইন্সেপেক্টর তদন্ত ) বিদুৎ কুমার বড়ুয়া (৪৪), এএসআই আতিকুর রহমান (৩৭), কনষ্টেবল সালাউদ্দীন (২৩) ও নুরে রহমান (২১)। আহতদের মধ্যে সাইফুলের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

ঘটনারদিন রাতে বার্মা কলোনী ও উল­াহ পাড়াতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে দোহাজারী সদর উল­াপাড়ার আবদুর শুক্কুরের পুত্র মোঃ নাজিম (৩০), ইসলামের (পালক) পুত্র শহিদুল ইসলাম সোহাগ (২২), হাবিবুর রহমানের পুত্র বেলাল রানা (২২) ও বার্মা কলোনীর মৃত আজিজের পুত্র আবদুর রহিম (৪০), ইমতিয়াজের পুত্র সুমন (২০), মৃত নুর হোসেনের পুত্র করিমুল­াহ (২০), মোঃ ইসমাইলের পুত্র মোঃ উল­াহ (১৮), মনির আহমদের পুত্র মোঃ জিকু (২০), হাশেমের পুত্র আবদুল (২২) কে আটক করে।

এব্যাপারে চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেশব চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৩/২৫রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *