চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

আবদুল হাকিম রানা পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় ঐক্যবদ্ধ আ’লীগ প্রার্থীর বিপরীতে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি : ভর করেছে হতাশা

প্রকাশ: ২০১৮-১২-০৯ ২১:৩১:১০ || আপডেট: ২০১৮-১২-০৯ ২১:৩৩:৪৩

আবদুল হাকিম রানা, বীর কন্ঠ :

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২  পটিয়া সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ থেকে পর পর দুইবারের নির্বাচিত এমপি আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরী এবারও আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। কিন্তু বিএনপি থেকে এককভাবে এনামুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হলেও সাবেক এমপি দুবারের সাবেক সাংসদ গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার না করায় দলটি এখন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।

ফলে নেতাকর্মীরা হতাশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। তারা রবিবার দল থেকে এনামুল হককে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার পরে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা নিয়ে এক প্রকার নির্ভার হলেও এখন সাবেক এমপি শাহজাহান জুয়েল মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় পড়েছেন বিপাকে। এখন তারা কার পক্ষে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবেন তাই নিয়েই শংকায় ভুগছেন। বর্তমানে যদিও বিএনপি থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে এনামুল হককে দলের মহা সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিঠি তুলে দিয়েছেন সেহেতু তিনি তা রবিবার রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে পৌঁছে দিয়ে ধানের শীষ প্রতিক বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। ফলে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে এনামুল হক যদি ধানের শীষ প্রতিক পান সে ক্ষেত্রে সাবেক এমপি গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল শেষ পর্যন্ত করবেন কি প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করবেন তা জানতে সোমবার সন্ধ্যা অবদি অপেক্ষা করতে হবে।

আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্র্নিং অফিসারের বরাত দিয়ে পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার জানিয়েছেন গাজী শাহজাহান জুয়েল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তবে এয়াকুব আলীর স্ত্রী নাহিদা ফারহানা তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এ আসনে এলডিপির আর কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতায় থাকলো না।

বিএনপি’র কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এনামুল হক এনাম এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও পটিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রিছ মিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির  তিনটি গ্রুপ রাজপথে সক্রিয় থাকলেও দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন গাজী শাহজাহান জুয়েল ও এনামুল হক এনাম। চূড়ান্ত মনোনয়নে গাজী শাহজাহান জুয়েল বাদ পড়লে দলের একক প্রার্থী হিসেবে এনামুল হক এনামই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে দলের শীর্ষ নেতারা জানান।

কিন্তুগতকাল ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে সাবেক এমপি বিএনপি নেতা গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেননি। ফলে পটিয়ায় বিএনপির ২ ধারার বিপরীতে খোশ মেজাজে রয়েছেন হ্যাট্রিক জয়ের কাছাকাছি থাকা বর্তমান সাংসদ আলহাজ্ব সামশুল হক  চৌধুরী এমপি। রবিবার সামশুল হক চৌধুলী এমপির সাথে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির, সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব সহ অন্যান্যরা নিজেদের সমর্থিতদের নিয়ে পৃথক সভা করে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সামশুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী করার ডাক দিয়েছেন। আজ সকালে সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী চেমন আরা তৈয়বের বাস ভবনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রাশেদ মনোয়ার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দেকে সাথে নিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্য এক সাথে কাজ করার বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এতে তারা তাকে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী করার বিষয়ে মাঠে ময়দানে এক সাথে কাজ করার মাধ্যমে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে তিনি জানান। বর্তমানে বিএনপির প্রার্থী যেখানে এখনো মসৃন পথে আগানোর ক্ষেত্রে নিজ দলের কাছেই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন সেখানে বর্তমান এমপি সামশুল হক চৌধুরী প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও পাড়ায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন সহ যাবতীয় কর্মকান্ড নব্বই ভাগ সমাপ্ত করে নিয়েছেন। ফলে আজ প্রতিক বরাদ্দের পরে তিনি তার বিগত ১০ বছরের উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রচার সহ নৌকার বিজয় নিয়ে যেখানে মাঠে ময়দানে চষে বেড়াবেন সেখানে নিজ ঘরেই তুষের আগুন নিভাতেই ব্যস্ত থাকতে হবে বিএনপির প্রার্থীকে। এই যখন অবস্থা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বলেন, দলের হাই কমান্ড আমাকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি তা রবিবার জেলা রিটার্নিং অফিসার ও পটিয়ায় সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসানের কাছে হস্তান্তর করেছি। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আজ ধানের শীষ প্রতিক আমাকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আমি আমার দলের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশী সহ সকলের সাথে যোগযোগ করেছি। তারা আমাকে আশ্বস্থ করেছেন যে, ধানের শীষের বিজয়ের জন্য কাজ করবেন। কারণ বিএনপির জন্য এ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা গণতন্ত্রের মা হিসেবে খ্যাত আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়া এখন কারাগারে বন্দি। আমরা এ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে তাকে জেল থেকে বের করে আনতে চাই। তাই আজ আমরা কে কি পেলাম সেটা ভাবলে হবে না আমাদের মাকে মুক্ত করতে যারা বিএনপিকে ভালবাসেন তাদেরকে ধানের শীষের বিজয়ের জন্য কাজ করতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *