চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস- রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় সরকারি গুরুত্বপূর্ন দপ্তর চালান ৯ নারী কর্মকর্তা

প্রকাশ: ২০১৯-০৩-০৮ ১১:৪৭:২৬ || আপডেট: ২০১৯-০৩-০৮ ১১:৪৭:২৬

 আব্বাস হোসাইন অাফতাব , প্রতিনিধি, রাঙ্গুনিয়া,: চট্টগ্রাম আজ ৮ মার্চ (শুক্রবার)আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের সম্মান জানাতে বিশ্বে একটি দিন পালিত হয়। নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয়ে নারী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই। তাঁরা এখন দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও সরকারি গুরুত্বপূর্ন কার্যালয় চালাচ্ছেন। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় সরকারি দপ্তরে বেশির ভাগই নারী কর্মকতা অফিস চালান।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন অফিসে নারী কর্মকর্তা হওয়ায় এসব অফিসে কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মসূচিতে পুরুষ কর্মকর্তার পাশাপাশি নারী কর্মকর্তারা সরকারি দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করছেন। শুধু অফিসে নয় সেবা দিতে তৃণমূলে ছুটে যান এসব নারী কর্মকর্তারা। স্বাচ্ছন্দ্যে সেবা দিতে গিয়ে এলাকায় পেশাজীবি ও সাধারণ মানুষদের সাথে সুসস্পর্ক গড়ে তুলেছেন ৯ নারী কর্মকর্তা। উপজেলার গুরুত্বপূর্ন ভূমি কার্যালয় চালাচ্ছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) পূর্বিতা চাকমা। তিনি একই সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বও পালন করছেন। তাঁর বাড়ি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাঙ্গুনিয়ায় যোগদান করেন তিনি। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

যোগদানের পর ভূমি অফিসকে সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানে রুপ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন। অফিসকে দালাল মুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। সাধারণ মানুষের হয়রানি কমাতে হাতের আবেদনের পরিবর্তে দুই পৃষ্ঠার আবেদন ফরম চালু করেন। এতে সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও মানসিক হয়রানি কমে গেছে। ভূমি অফিসে প্রবেশে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামরা। এতে কমেছে দালাল ও প্রতারক চক্র। কৃষিখাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার। যোগদানের পর থেকে তিনি কৃষকদের সেবা পৌঁছে দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, ফসলের পোকা মাকড় দমনে নতুন পদ্ধতি ব্যবহারসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। ধনেপাতা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন শস্য ফলাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন। ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের সার বিতরণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করেন। এবার চট্টগ্রামের শস্য ভান্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলে আমনের বাম্পার ফলনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। এর আগে তিনি হাটহাজারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁর বাড়ি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। নারীদের সার্বিক কল্যান ও অধিকার আদায়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোনিয়া সফি। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলায়।

এর আগে তিনি ফটিকছড়ি ও হাটহাজারিতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালন করেন। নারী নির্যাতন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, মহিলাদের মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা পেতে নারীদের ব্যাপক সহযোগিতা করছেন তিনি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তনুশ্রী গোস্বামী সস্প্রতি যোগদান করেছেন। ১৮ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। উপজেলা ডাকঘরে পোষ্ট মাষ্টার (কর্মকর্তা) হিসেবে মনোয়ারা বেগম ২০১৬ সালে যোগদান করেন। বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। ডাক বিভাগের সকল সেবা পৌঁছে দিতে তিনি নিরলস কাজ করছেন। উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা হিসেবে সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়ায় যোগদান করেছেন রংপুরের মেয়ে রোকসানা নারগিছ। তিনি তথ্য সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছেন। উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকতা জিসা চাকমা ও লায়লা বিলকিস প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক কর্মকান্ডে নিরলস কাজ করছেন।

জিসা চাকমার চাকুরি জীবনে প্রথম যোগদান রাঙ্গুনিয়া। রাঙ্গামাটির জেলার তবলছড়ি উপজেলার মেয়ে জিসা চাকমা ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪ সালে উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। কুমিল্লা জেলার মেয়ে লায়লা বিলকিস ২০১৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় যোগদান করেন। লীলা চৌধুরী সহকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আছেন। মাঠ পর্যায়ে তিনি পরিবার কল্পনা বিষয়ে ভাল কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন , ‘ পুরুষের পাশাপশি নারী কর্মকর্তারা ও ভাল কাজ করছেন। সবক্ষেত্রে নারীদের মূল্যায়ন করা উচিত।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *