শফকত হোসাইন চাটগামী বাঁশখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-০৩-২৩ ২৩:১১:০৪ || আপডেট: ২০১৯-০৩-২৩ ২৩:১২:২৬
শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী : রাত পোহালেই বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জনসহ মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ৩ লাখ ২ হাজার ভোটার অধ্যুষিত বাঁশখালী ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১০৫টি।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিবের সাথে আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খোরশেদ আলম (আনারস) এর দ্বিমুখী লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নবীন প্রার্থী গালিব দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং প্রয়াত সাবেক এমপি সুলতান উল কবিরের সন্তান হিসেবে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও দলের দক্ষিণ জেলার শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম অভিজ্ঞতায় রয়েছেন বেশ এগিয়ে। তিনি এর আগেও ২ বার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেন। এবারও দলীয় মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তিনি। তৃণমুলে তার একটি শক্ত অবস্থান থাকায় শেষ মুহুর্তে লড়াই জমে উঠেছে।
রবিবার এই ২ প্রার্থীর যে কোন একজন শেষ হাসি হাসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে অপর প্রার্থী মৌলভী নুর হোসেন (কাপ পিরিচ) গেল বারের আগের বারে ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলেও তিনি শোচনীয়ভাবে হেরে যান। তিনি নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তবে ভোটের মাঠে তার তেমন প্রভাব সৃষ্টি হয়নি। ফলে প্রার্থী ৩ জন হলেও মুল লাড়াইটা হবে নৌকা ও আনারসের মাঝে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৪ জন। চেয়ারম্যান পদের মত ৪ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও সবাই আওয়ামীলীগের।
এখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর (টিউবওয়েল) এর সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরানুল হক ইমরান (উড়োজাহাজ) ও যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ সোলাইমান (মাইক) প্রতীকের প্রার্থীর মাঝে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। এখানে উড়োজাহাজ প্রতীক টিউবওয়েল প্রতীকের গলারকাটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ছাত্রলীগের এই সাবেক সভাপতির মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল করার পর হাইকোর্ট তার মনোনয়নের বৈধতা দিলে হিসাব কিতাব পাল্টে যায়। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রচার প্রচারনায় অধ্যাপক আবদুল গফুর, ইমরানুল হক ও সোলাইমান ছাড়াও তালা প্রতীকে শাহাদাত রশিদ চৌধুরী নামে আরো একজন নির্বাচন করছেন। তিনি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী অংশ আবদুল্লাহ কবির লিটন অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী রেহানা আক্তার কাজেমী (ফুটবল) বেশ এগিয়ে রয়েছেন। তবে অপর প্রার্থী দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী নুরীমন আক্তার নুরী (প্রজাপতি) ও প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও দ্বিমুখী লড়াই হবে। তবে রেহানা আক্তার কাজেমীর প্রতি স্থানীয় এমপি এবং দলীয় সমর্থন থাকায় তিনিই মুলত সব দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোন ধরণের অনিয়ম এবং গোলযোগের চেষ্টা করা হলে প্রশাসনের পক্ষ কঠোর হস্তে তা দমনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধীদল গুলোর বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা এই নির্বাচনও অন্তত শান্তিপুর্ণ হোক সেটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।