চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

মীর সোলায়মান রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি

রাঙামাটি শহরে কাপ্তাই হ্রদের উপর অবৈধভাবে নির্মানাধীন ভবনের কাজে মাটি চাপা পড়ে তিন শ্রমিক নিহত

প্রকাশ: ২০১৯-০৬-০৩ ০১:৫২:১০ || আপডেট: ২০১৯-০৬-০৩ ০১:৫২:১০

মীর সোলায়মান, রাঙামাটি : রাঙামাটি শহরের মহিলা কলেজ এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের উপর অবৈধভাবে নির্মানাধীন একটি বহুতল ভবনের কাজ করার সময় মাটি চাপা পড়ে তিন শ্রমিক নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে আরো দুই শ্রমিক। রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জুহেদুল ইসলাম রনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। নিহতরা হলেন সেন্টু মিয়া, পাপ্পু ও আঙ্গুর আলী। এরা শহরের পুলিশ অফিস সংলগ্ন নীচের রাস্তার বাসিন্দা। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায় রাঙামাটি শহরের সরকারী মহিলা কলেজ এলাকার বাসিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পারভিন আক্তার কাপ্তাই হ্রদের উপর অবৈধভাবে একটি বহুতল ভবন নির্মান কাজ শুরু করেন বেশ কিছুদিন আগে। ওই বহুতল ভবনের পিলারের ব্যাজ করার জন্য রবিবার সকাল থেকে পাহাড়ের ঢালুতে মাটি কাটছিলো ৯জন শ্রমিক।

প্রায় ৬ ফিট গর্ত করার পর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপর থেকে মাটি ধসে পড়লে পাঁচজন শ্রমিক মাটি চাপা পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয়রা এসে সাইফুর ও সবুজ নাম দুজনকে আহত অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস পুলিশ ও সেনাবহিনী এসে উদ্ধার কাজ চালায়। এ সময় মাটির নীচ থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। রাঙামাটি পৌর সভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল করিম জানান, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পাপরভিন আক্তারের ভবনের কাজ করছিলো শ্রমিকরা। মাটি কাটার এক পর্যায়ে উপর থেকে মাটি ধ্বসে পড়লে শ্রমিকরা গর্তের মধ্যে মাটি চাপা পড়ে। এ ঘটনায় তিনজন নিহত হন। তিনি জানান ভবনটি নির্মানে পৌরসভা থেকে কোন প্রকার অনুমতি নেয়া হয়নি। জানাযায় ভবনের মালিক পারভিন আক্তার জেলা যুবলীগের সহসভাপতি সেলিম এর বোন। ঘটনাস্থরে পাশের্^ সেলিমের একটি বহুতল ভবন রয়েছে। ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একে এম মামুনুর রশদি।

তিনি জানান অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে ভবনটি নির্মান করা হচ্ছে। ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ দায়িদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরে জেলা প্রশাসক রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিহতদের দেখতে যান। তিনি তাৎক্ষনিক নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। ওই এলাকয় গত তিন বছর আগে একটি ভবন ধসে পানিতে পড়ে গেলে চারজন নিহত হয়। এদিকে ঘটনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতদের স্বজনদের আহজারিতে ভারি হয়ে উঠে ওই এলাকার পরিবেশ। এ ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন নিহত ও আহতদের স্বজনরা। এদিকে ঘটনার পর থেকে ভবনের মালিক শিক্ষক পারভিন আক্তার গা ঢাকা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *