চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

মাইকিং করে কেনা হচ্ছে ধান !

প্রকাশ: ২০১৯-০৭-১৩ ০০:১৮:০৯ || আপডেট: ২০১৯-০৭-১৩ ০০:১৮:০৯

আব্বাস হোসাইন আফতাব, রাঙ্গুনিয়া :

“ ধান কেনা হবে , ধান কেনা হবে, সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান কেনা হবে।” হাটের ঠিকানা ও সময় জানিয়ে এমনভাবে মাইকিং (প্রচারণা) করে ধান কিনছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন। প্রতি ইউনিয়ন থেকে মাইকিং করে কেনা হচ্ছে ধান। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ও পদুয়া থেকে ১২০ জন কৃষকের কাছ থেকে ১২০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান উপস্থিত থেকে নিজে যাচাই বাছাই করে ৩১ জন কৃষকের কাছ থেকে ৪০ মেট্রিক ধান কিনেন।

কৃষকের ধানে চিটা বেশি হলে চিটামুক্ত করে উপজেলা খাদ্যগুদামেও নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে কৃষকরা যাতে দূর্ভোগ ও হয়রানির শিকার না হন সেজন্য কৃষকদের নিজ নিজ এলাকায় ধানের হাট বসিয়ে ধান বিক্রির এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর আগে পুরো উপজেলা থেকে ২২০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। আবার নতুনভাবে ৩৬৭ মেট্রিকটন ধান কেনা হচ্ছে। পুরো উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিদিন মাইকিং করে হাট বসিয়ে ধান কেনা হচ্ছে। যেদিন যে এলাকায় ধানের হাট বসবে তার আগের দিন ওই এলাকায় মাইকিং করা হয়। যাতে প্রকৃত কৃষকরা ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত না হয়। ধান কিনতে কোনো দালালের কাছে যাওয়ার দরকার নেই।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মানসম্মত ধান ২৬ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে। কেউ যদি চান আমার অফিসে এসে ধান বিক্রি করতে পারেন। ” কোদালা ইউনিয়নের কৃষক কালাম মিয়া (৫৪) বলেন, ‘ইউএনও স্যার আমাদের এলাকায় এসে মাইকিং করে ধানের হাট বসিয়ে ধান কিনছেন। এমন সুযোগ কখনো পাইনি। ঝড় বৃষ্টির দিনে ১৫ কিলোমিটার দূরে খাদ্য গুদামে গিয়ে ধান বিক্রি করতে গেলে দূর্ভোগ পোহাতে হবে , যাতায়ত খরচও বেশি পড়বে। ঘরের কাছে ধানের হাটে গিয়ে ধান বিক্রি করাতে ন্যায্যমূল্যে পেয়েছি দুর্ভোগও কমেছে। ধানের এমন মূল্য পেলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।

স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের কৃষক প্রাঞ্জল সাহা বলেন, ‘ধানে কিছুটা আর্দ্রতা থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ধান নেয়নি। ধান শুকিয়ে খাদ্যগুদামে কৃষি কার্ডসহ পরে নিতে বলা হয়েছে।’ আগে গুদামে কখনো ধান বিক্রির সুযোগ পাননি তিনি। একই এলাকার কৃষক রেজাউল করিম বলেন, তিনি ২৬ টাকা কেজি দরে ১ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করেছেন।

এই রকম সুবিধা কখনো পাইনি। বাজারে প্রতি মণ ধান ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রির কারণে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমাদের এলাকায় এসে ১ হাজার ৪০ টাকা মণে ধান কিনছে সরকার। এই দামে ধান কিনলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। কৃষকদেরও দুর্ভোগ কমবে। উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহমান খাঁন বলেন, ‘ প্রকৃত কৃষক যাতে খাদ্য গুদামে ধান-চাল দিতে পারেন সে জন্য কৃষি কার্যালয় থেকে তালিকা নেওয়া হয়েছে। অনেক সময় ধান মানসম্মত না হলে নেয়া সম্ভব হয়না। কৃষকরা যাতে গুদামে ধান নিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন না হন কৃষকদের নিজ গ্রামে গিয়ে ধান কেনা হচ্ছে। ধানের আর্দ্রতার মাত্রা ও অন্যান্য গুণমান সম্পর্কে কৃষকদের আগে ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

ধান সংগ্রহের এই কার্যক্রম আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। কোদালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, একেবারে কৃষকের দোড়গোড়ায় এসে ধান কেনার কারনে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন, ধানের ন্যায্যমূল্যেও পাচ্ছেন কৃষকরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *