চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মিজবাউল হক চকরিয়া অফিস

ফাঁশিয়াখালী ইউপির উপ-নির্বাচন বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের গণসংযোগ

প্রকাশ: ২০১৯-০৭-১৪ ২২:৩৪:৫৮ || আপডেট: ২০১৯-০৭-১৪ ২২:৩৪:৫৮

মিজবাউল হক, চকরিয়া: বৈরি আবহাওয়া ও মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভোটারদের ধারে ধারে ভোট ভিক্ষা করছেন ফাঁশিয়াখালী ইউপির উপ-নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। অব্যাহত বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যার কারণে জমে উঠেনি ভোটের মাঠ। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ঘরে বসে নেই। ছুটছেন বিভিন্ন ওয়ার্ড ও পাড়া মহল্লায়। ৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন নিলেও শেষ পর্যন্ত ৩জন প্রার্থী গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা যায়, আগামী ২৫ জুলাই চকরিয়া উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপ-নির্বাচনে লড়াই করছেন ৮জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। ১০জুলাই প্রতীক পেয়ে মাঠে-ঘাটে চষে বেড়াচ্ছেন এসব প্রার্থীরা। চলছে মাইকিং। পোষ্টারে ছেয়ে গেছে।

প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী (নৌকা), ওয়ার্কার্স পার্টির কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাঈনউদ্দিন হাসান শাহেদ (আনারস), ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মোঃ ফরিদুল আলম চৌধুরী (মোটরসাইকেল), ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ নাজমুল হাসান লিটন (ঘোড়া), সহ-সভাপতি হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ (রজনীগন্ধা), যুবলীগ নেতা রিদুয়ানুল হক (চশমা), সাবেক ইউপি সদস্য রফিক আহমদ (টেলিফোন) ও মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন (অটোরিকসা)। ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী কাগজে-কলমে থাকলে ভোটের মাঠে রয়েছেন ৩ জন। এরমধ্যে আওয়ামীলীগ মনোনীত গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী (নৌকা), ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মাঈনউদ্দিন হাসান শাহেদ (আনারস) ও জামায়াত নেতা ফরিদুল আলম চৌধরী (মোটরসাইকেল)।

গত ১৮মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী। কিন্তু নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও দলের কিছু নেতার ষড়যন্ত্রের কারণে হেরে যান তিনি। ফাঁশিয়াখালীর জনগণের দাবীর মুখে গিয়াসউদ্দিন চৌধুরীকে নৌকা প্রতীক তুলে দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ। তিনি নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচনের মাঠে চষে বেড়াছেন চিরচেনা ফাঁশিয়াখালীতে। সর্বমহলে রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা। ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্যানেল চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন বলেন, উপ-নির্বাচনে হেভিওয়েট ও শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী। তিনি এ ইউনিয়নে চারবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনবার বিজয় হয়েছেন। আরেকবার নজিরবিহীন ভোট কারচুপি করে বিজয় ছিনিয়ে নেন বিএনপি-জোটের আমলে। তিনি সফল একজন জনপ্রতিনিধি। শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং দীর্ঘ ২৫বছর ধরে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২৫ জুলাই উপ-নির্বাচনে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী তথা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয় করবেন।

চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মারুফ বলেন, গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী এই ইউনিয়নকে ঢেলে সাজিয়েছেন। করেছেন ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড। রাস্তা-ঘাট, কালভার্ট, স্কুল মাদ্রাসা মসজিদ ও মন্দিরের উন্নয়ন। যা এখনো দৃশ্যমান। তার উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই এই ইউনিয়নে। গিয়াসউদ্দিন চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কোন প্রার্থী এখনে নেই। তিনি বিপুল ভোটে ২৫জুলাই উপ-নির্বাচনে বিজয় লাভ করবেন। একইভাবে ওয়ার্কার্স পার্টির কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক মাইনুউদ্দিন হাসান শাহেদ আনারস প্রতীক নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি গত ফাঁশিয়াখালী ইউপি নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তেমন সুবিধা করতে পারেনি। পরবর্তী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি। তবে এবারের নির্বাচনে তরুণ ভোটারকে টার্গেট করে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। তিনিও বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে ভোট চাইছেন।

অপরদিকে জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল আলম চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও বসে নেই। যাচ্ছেন ভোটারের কাছে। ভোটের মাঠে তেমন পরিচিতি না থাকলেও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোটারদের ধারে ধারে ভোট ভিক্ষা করছেন এই জামায়াত নেতা। গত ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি। অন্যদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ নাজমুল হাসান লিটন (ঘোড়া), হাসনাত মোহাম্মদ ইউসুফ (রজনীগন্ধা), রিদুয়ানুল হক (চশমা), রফিক আহমদ (টেলিফোন) ও মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন (অটোরিকসা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে অনেকে এখনো পোষ্টার পর্যন্ত ছাপায়নি। কোথাও কোন গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভাও করেননি। মুলত এসব প্রার্থীদের নিজস্ব কোন ভোট ব্যাংকও নেই। শুধু নিজের পরিচিতি ও অন্য প্রার্থীর এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *