চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নীরব জসীম ডেস্ক কন্ট্রিবিউটর

কলকাতায় দুই বাংলাদেশি পর্যটকের মৃত্যু : তদন্তে নাটকীয় মোড়

প্রকাশ: ২০১৯-০৮-২৩ ১২:২২:১০ || আপডেট: ২০১৯-০৮-২৩ ১২:২২:১০

নিউজ ডেস্ক : কলকাতায় দুই বাংলাদেশি পর্যটকের মৃত্যুর জন্য দায়ী বিখ্যাত বিরিয়ানি চেইনের মালিকের ছোট ছেলে আরসালান পারভেজ নয়। বরং দুর্ঘটনার সময় জাগুয়ার গাড়িটি চালাচ্ছিল আরসালান পারভেজের বড় ভাই রাগিব পারভেজ। এই দুর্ঘটনার পরদিনই রাগিব দুবাই চলে যান। কিন্তু তার বাবা আখতার পারভেজ ভেঙে পড়েছিলেন, তা দেখে ছোট ভাই নিজ থানায় আত্মসমর্পণ করে।

গত ১৭ আগস্ট কলকাতার লাউডন স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণির সংযোগস্থলে ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন বাংলাদেশি কাজি মুহাম্মদ মইনুল আলম (৩৬) ও ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০))।

পুলিশি তদন্তে এখন এই ঘটনার নাটকীয় মোড় নিয়েছে। বুধবার কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা জানান, শেক্সপিয়র সরণিতে জাগুয়ার গাড়ির স্টিয়ারিং ছিল আরসালানের বড় ভাই রাগিব পারভেজের হাতে। অভিযুক্ত তার ছোট ভাই আরসালান পারভেজ নন।

প্রশ্ন উঠেছে, কেন আরসালান বিরিয়ানি চেইনের মালিক আখতার পারভেজ তার ছোট ছেলেকে এই ঘটনায় আত্মসমর্পণ করালেন? কোনো কিছু গোপন করতেই কি এই পরিকল্পনা?

বুধবার লালবাজারে সংবাদ সম্মেলন করে মুরলীধর শর্মা জানান, শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার পর শেক্সপিয়ার সরণিতে কখনও হেঁটে, কখনো দৌড়ে যেতে দেখা গিয়েছিল ওই গাড়ির চালককে। কিন্তু তার মুখ স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি।

পরে ওই উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন গাড়ি থেকে পাওয়া একটি মোবাইলের সূত্র ধরে ওই সময় গাড়ি কে চালাচ্ছিলেন, তা জানা গেছে। কারণ, ওই গাড়িটির সিস্টেমের সঙ্গে মোবাইলের লিঙ্ক করা ছিল। নির্দিষ্ট মোবাইলের সঙ্গে গাড়ির সিস্টেম না মিললে, গাড়ি চলবে না। দুর্ঘটনার আগে যে মোবাইল দিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল, তার সন্ধান পাওয়া গেছে গত সোমবার। পরে সেই মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি দেখেই চালকের ছবি চিহ্নিত করা হয়েছে।

এরপর ওই এলাকার সিসি ক্যামেরা এবং আখতার পারভেজের বাড়ির সামনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন, গাড়ির চালক ছিলেন রাগিব। ঘটনার পর দিনই রাগিব দুবাই চলে গিয়েছিলেন। দু’দিন আগে তিনি ফিরে এসেছেন। রাগিব আরসালানের মুম্বাই ও দুবাইয়ের ব্যবসা দেখভাল করেন। দুবাইয়ে গিয়ে রাগিব জানতে পেরেছিলেন এই ঘটনায় তার ভাইকে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুবাই থেকে কলকাতায় ফিরে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন রাগিব। সেখান থেকেই পুলিশ গ্রেফতার করে রাগিবকে। গ্রেফতার করা হয়েছে তার মামাকেও।

দুর্ঘটনার পর যে আরসালান পারভেজকে নিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করাতে গিয়েছিলেন যে ব্যক্তি, তিনি বলেছেন, আমাদের না জানিয়ে দুবাইয়ে চলে গিয়েছিল রাগিব। ওদের বাবা আখতার পারভেজ ভেঙে পড়েছিল, তা দেখে ছোট ছেলে আরসালান পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। ও বলেছিল, যেভাবে পুলিশ চাপ দিচ্ছে তাতে আমিই ধরা দিই। এর মধ্যে দুবাই থেকে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে তোমরা ভাই বোঝাও। এখন তার ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *