খালেদ হোসেন টাপু রামু(কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০১৯-১০-০৩ ২০:৪০:৩১ || আপডেট: ২০১৯-১০-০৩ ২০:৪০:৩৯
খালেদ হোসেন টাপু,রামু :
কক্সবাজারের রামুতে বর্ণিল আয়োজনে শুরু হলো ঐতিহ্যবাহি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। গ্রামীণ লোকজ ঐতিহ্য নৌকা বাইচ খেলা দেখতে নদীর দুই তীর মুখরিত করে তোলে হাজার হাজার নারী-পুুরুষ।
বৃহষ্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রামু বাজারের পূর্বপাশ্বে বাঁকখালী নদীর চেরাংঘাটা পয়েন্টে প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকজ ঐতিহ্যে ভরপুর পর্যটন রামু উপজেলা। এখানে রয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা। গ্রামীণ লোকজ ঐতিহ্য নৌকা বাইচ খেলা। শত বছর আগে রামুর বাঁকখালী নদীতে রাখাইনরা নৌকা বাইচ খেলা শুরু করেন। কালক্রমে এ খেলা আমাদের ক্রীড়া-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। তিনি গুণি ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদেরকে স্মরণ করে অন্যান্য ক্রীড়ার মত নৌকা বাইচ ধারাবাহিকভাবে আয়োজনে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করে যাবেন বলে আশ্বাস দেন।
রামু কেন্দ্রীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ উল আলম, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা, রামু থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল খায়ের, ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেন কোম্পানী, ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলাতান, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো, চাকমারকুল ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, ঈদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো, জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হক, ক্রীড়া সংগঠনক গিয়াস উদ্দিন কোম্পানী, সমাজ সেবক হাজী নুরুল হক নুরু কোম্পানী, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরহাদ হোমেন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, জেলা যুবলীগের অন্যতম নেতা পলক বড়–য়া আপ্পু, রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়–য়া, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরাল হেলাল, রামু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহবায়ক আনছারুল হক ভূট্টো, সদস্য সচিব সাংবাদিক খালেদ হোসেন টাপু, জহির কোম্পানী, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক, যুবলীগ নেতা ওসমান গনি, ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইয়াছিনসহ মোঃ ইমরান প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুবলীগ নেতা নবীউল হক আরাকান ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আজিজুল হক আজিজ। প্রতিযোগিতার বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বলেন, রামুর ক্রীড়াঙ্গনের আলোকিত মানুষরা আবহমান কাল ধরে বাঁকখালী নদীতে নৌকা বাইচ খেলা আয়োজন করে আসছেন। তাঁদের অনেকে আজকে আমাদের মাঝে নেই। সেই সব গুণি ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করে তিনি বলেন, পুরোনো দিনের জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে এ প্রতিযোগিতা আয়োজন অব্যাহত রাখতে হবে।
উদযাপন পরিষদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর মেম্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদ উল্লাহ আসাদ, ইউপি সদস্য যথাক্রমে নুর আহমদ, রোকন উদ্দিন, মোঃ কামাল উদ্দিন, জাফর আলম, লিটন বড়–য়া, হাজী মহি উদ্দিন, আমান উল্লাহ সওদাগর, হাসান আজিজ, সাইফুল ইসলাম, মোর্শেদ আলম, গোপাল নাথ।
নৌকা খেলায় ঘোষকের দায়িত্ব পালন করেন ছৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুর শুক্কুর, ওমর ফারুক মাসুম।
রামু কেন্দ্রীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান, উদ্বোধনী দিনে ৫০ পাড়ি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার সদর, চকরিয়া ও রামু উপজেলার মোট ২৬টি নৌকা অংশ নেয়।
আগামী ১০ অক্টোবর প্রতিযোগিতার ২য় দিনের খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ‘জাজেজ রেডি, গো’ ঘোষকের মাইকে ঘোষণার সাথে সাথে বাঁকখালীর পানিতে তরঙ্গ তুলে ছুটে চলে দু’নৌকার আট মাঝি-মাল্লা। নদীর দু’পাড়ে হাজার হাজার শিশু-যুবক, নারী-পুরুষের উচ্ছাস ধ্বনি ‘মারো মারো’। প্রিয় নৌকা বাইচ দলের মাঝি-মাল্লাকে দ্রুত দাঁড় বেয়ে এগিয়ে যেতে নদীর হাটু-কোমর পানিতে নেমেও ‘মারো মারো’ শব্দে উজ্জীবিত করেন সমর্থকরা।
উদ্বোধনী ব্যাচে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ বনাম জীনের ঘোনা দক্ষিণ মিঠাছড়ি রামু দলের মধ্যে শুভ সূচনা হয়।