চট্টগ্রাম, , রোববার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রদীপ শীল রাউজান প্রতিনিধি

পাঁচখাইন মহিউল উলুম এতিমখানার ১৪০ এতিম মানবেতর জীবণ যাপন

প্রকাশ: ২০১৯-১০-১২ ১৮:৪৪:৩০ || আপডেট: ২০১৯-১০-১২ ১৮:৪৪:৩৯

প্রদীপ শীল, রাউজানঃ

পাঁচখাইন মহিউল উলুম এতিমখানা ও হেফজখানার ১৪০ এতিম মানবেতর জীবণ যাপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিম্ন মানের খাওয়ার ও অপরিমান খাওয়ার প্রদানসহ অর্থ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১২ অক্টোবর সরেজমিন পরিদর্শন কালে নানা অনিয়মের চিত্র দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন ও এতিম ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত এক সাপ্তাহ যাবত এতিম খানায় কোন লোকজন নেই এখানে। রান্না করার বাবুচি দিয়ে দেখ ভালোর ব্যবস্থা রেখে উদাও হয়ে যায় দায়িত্বশীল কর্তারা।এতিম খানার সুপার থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। মাসে মাসে আসেন হিসার নিকাশ করে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য।

মহিউল উলুম এতিমখানা ও হেফজখানা সংলগ্নে রয়েছে হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) একটি মাজার। মাজারের দানবাক্সে ভক্তদের দেয়া চাঁদা জমা হয় প্রায় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। ঐ টাকা এতিমদের জন্য দীর্ঘ দিন যাবত ব্যয় করা হতো। কিন্তু বর্তমানে কিছু টাকা ব্যয় করলেও বাকী সব টাকা চলে যায় সুপারের পকেটে।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, মহিউল উলুম এতিমখানা ও হেফজখানার জন্য ৭০জন সরকারের ক্যাপিটাল গ্র্যান্ড প্রাপ্ত এতিম সুবিধা পেয়ে থাকে। এছাড়া স্থানীয় সমাজ সেবক আবদুল সালাম প্রতিবছর এক’শ বস্তা চাউল দিয়ে থাকে। তিনি বর্তমানে দিচ্ছে ৪০ বস্তা চাউল। এছাড়া প্রতি সাপ্তাহিক এতিমদের দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় উঠানো হয় চাউল ও অর্থ। এতিমের জন্য প্রায় সময় সমাজের বৃক্তশালীরা দাওয়া দিয়ে থাকে। তারপরও কেন অর্ধ অনাহারে থাকতে হয় এতিম এসব শিশুদের।

এতিম শিশু মো. জাহেদুল আলম জানান, খাবার দেয়া হয় খুবই অল্প। ভাতের সাথে কোন সময় সবজী আবার কোনদিন ডিম দেয়া হয়। সেই জানায় আজ শুধু কদু সবজী দিয়ে ভাত দিয়েছে। পেট ভরে খেতে পারি না। একই ভাবে এতিম ইয়াছিন আলী, ফরিদুল ইসলাম, সাকিবুল ইসলাম জানান, আমরা পেট ভরে খেতে চাই। আমাদের খাবার দিন। আমরা খুবই কষ্টে জীবণ যাপন করছি।

দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষক মোহাম্মাদ রেদোয়ান জানান, তিনি একাই সামলান ১৪০ শিশুকে। প্রশ্ন হচ্ছে ১৪০ জনকে একজন দিয়ে দেখ ভাল কতটা যুক্তিযুক্ত। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল খালেক মেম্বার জানান, এতিমরা মানেবেতর জীবণ যাপন করছে শুনে আমি বার বার ছুটে আসি এতিমখানায়। পরিচালনা পরিষদের সাথে এই নিয়ে অনেকবার বাগবিতণ্ডা হয়েছে। আসলে তারা টাকার লোভে এতিমখানা খুলে এতিমের টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। সরকারী ও বেসরকারি যে অর্থ আসে, সে অর্থ দিয়ে ৫০০ এতিমের ভরণ পোষণ করা যায়।

এতিম খানার অনিয়ম সম্পর্কে স্থানীয় চেয়ারম্যান ভূপেষ বড়ুয়া জানান, এতিমখানার অনিয়ম ও এতিমদের মানবেতর জীবন যাপনের কথা শুনেছি। যারা অর্পিত দায়িত্ব নিয়ে এতিমদের অবহেলা করে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। তিনি বলেন প্রশাসন যদি মনে করে এতিমখানাটি ইউনিয়ন পরিষদের আওলতায় নিয়ে আসতে তাহলে আমি সুন্দর ভাবে পারিচালনা করতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *