চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

admin

রাঙ্গুনিয়ায় গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগে শাশুড়ি ও দুই ননদ কারাগারে

প্রকাশ: ২০১৯-১০-১৩ ১৮:৪৬:৫৩ || আপডেট: ২০১৯-১০-১৩ ১৮:৪৬:৫৯

আব্বাস হোসাইন আফতাব , রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম :


চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এক গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধুর নাম শানু আকতার (২৫)। তিনি উপজেলার পূর্ব সরফভাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলী বক্সের মেয়ে এবং শিলক ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বহদ্দার পাড়া এলাকার শাহ আলমের পুত্র মো. ফোরকানের স্ত্রী। তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এই ঘটনায় ঘটে। নির্যাতনের ঘটনায় রাতে গৃহবধুর শাশুড়ী জান্নাতুল ফেরদৌস (৫০) ননদ খালেদা আকতার (২৩) ও ফারজানা আহমদ ময়না (২১)কে গ্রেপ্তার করে গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই মো. মুজিবুর রহমান বলেন, গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

গৃহবধুর স্বজন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ‘২০১৪ সালে উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বহদ্দার পাড়া এলাকার শাহ আলমের পুত্র প্রবাসী মো. ফোরকানের সাথে শানু আকতারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সুখের সংসার কাটছিল তাঁদের। এর মধ্যেই তাঁদের কোলে কন্যা সন্তান আসে। বিয়ের পর থেকে স্বামী দুই বার দেশে আসে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কয়েক বছর ধরে মনোমালিন্য চলছিল। গত বছর স্বামী বিদেশ চলে যায়।

গৃহবধু শানু আকতারের অভিযোগ, “ তিন বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে পাশের বাড়ির এক মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর প্রতিবাদ করায় তার উপর এমন নির্যাতন চালিয়েছিল স্বামী। গত বছর স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর শ্বশুর-শাশুড়ি, ও ননদরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে। সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত ঘরের দরজা বন্ধ করে শ্বশুর- শাশুড়ি, ননদরা মিলে রশি দিয়ে আমার হাত পা বেঁধে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করেন।

শুক্রবার রাতে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শিলক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা এস আই মজিবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গৃহবধূ শানু আকতারকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দিনগত রাতে গৃহবধুর শানু আকতারের মা জাহানারা বেগম বাদী বাদী হয়ে শশুড়-শাশুড়ী, ননদসহ ৫ জনকে আসামি করে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর শাশুড়ী ও দুই ননদকে তাঁদের শিলক ইউনিয়নের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “ গৃহবধু সরফভাটার মেয়ে। শশুড় বাড়িতে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশকে খবর দিই। ”
এদিকে , গৃহবধুর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মো. হাসান মুরাদ হাঁত পা বাঁধা গৃহবধুর ছবি পোষ্ট দিয়ে স্ট্যাটাসে লিখেন “ আমাদের অবস্থান সব সময়, নির্যাতিতদের পক্ষে। মানুষ কতটা নির্মম হলে এই কাজ করতে পারে..????? মেয়েটির নাম শানু আকতার। মেয়ের মা আমাকে দেখে কান্না করে দেয়।

তিনি বলেন, মেয়েকে বাঁচাও, তাকে তার শশুর বাড়ির লোকজন হাত পাঁ বেধে নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি,পরে ভাবলাম একটু দেখে আসি। মেয়ের শশুড় বাড়িতে ঘটনা দেখে পুলিশকে সহযোগিতা করি। ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *