কাইছার হামিদ
প্রকাশ: ২০১৯-১০-২৪ ০৬:৫১:৫৪ || আপডেট: ২০১৯-১০-২৪ ০৬:৫২:০৩
কাইছার হামিদ: সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলর, প্রকৌশলীসহ ২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ক্যাসিনোকাণ্ড, মানি লন্ডারিং ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজটি করেছে। সম্প্রতি যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের পাশাপাশি অনুসন্ধান চলছে এমন কয়েকজনের নামও এ তালিকায় আছে।
দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ সংক্রান্ত চিঠি এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর পাঠিয়েছেন। অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধেই প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের সবার নামে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে। আগামী কয়েক দিনে আরও অনেকেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, ভোলা-৩ আসনের এমপি নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, গ্রেফতার ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সম্রাটের সহযোগী এনামুল হক আরমান, এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, মোহামেডান ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ মো. লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান, গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত দফতর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার স্ত্রী নাবিলা লোকমান, গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই, ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া এনামুল হকের সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ (আজাদ রহমান), কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধেও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশে মানি লন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগসংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তারা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দুদকের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িতদের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে। পরে আরও দু’জনকে দলে যুক্ত করা হয়। এ দলের সদস্যরা গণমাধ্যমে আসা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম যাচাই-বাছাই করে একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছেন। সংস্থার গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। পাশাপাশি র্যাব ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধানরা দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে বিপুল পরিমাণ তথ্য সরবরাহ করেন। সেসব তথ্য ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সোমবার জি কে শামীম ও খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক।