চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রফিকুল আলম ফটিকছড়ি প্রতিনিধি

১ যুগেও পূর্ণতা পায়নি ফটিকছড়ির ২০ শয্যা হাসপাতাল

প্রকাশ: ২০১৯-১২-০৩ ১৭:০৮:০১ || আপডেট: ২০১৯-১২-০৩ ১৭:০৮:০৯

রফিকুল আলম,ফটিকছড়ি :

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা সদরের “ফটিকছড়ি সদর ২০ শয্যা হাসপাতাল’’ ১ যুগ পর ও পূর্ণতা পায়নি। এ হাসপাতালটি ফটিকছড়ি পৌর এলাকা ও পার্শ্ববর্তী ৪ টি ইউনিয়নের ২ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ৩ তলা বিশিষ্ট ২৭ টি কক্ষের ২য় ও ৩য় তলা যেন কারো পরিত্যক্ত বসত ঘরের কক্ষ। এ হাসপাতালে প্রতিদিন ২ শতের উপরে রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমান নেই ঔষধ ।


জানা যায়,২০০৭ সালে ২৯ মার্চ সিএমএমইউ, স্বাস্থ্যা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নির্মিত হাসপাতালটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন, তৎকালীন তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল(অবঃ) ডাঃ এ.এস. এম. মতিউর রহমান। নির্মাণের পর ২০০৯ সালে হাসপাতালটি চালু হয়। কাগজে কলমে হাসপাতালটিতে ৪ জন কনসালটেন্ট গাইনিসহ মোট ৪ জন ডাক্তারের অনুমোদিত পদ থাকলেও ১ টি পদ শূন্য, গাইনির ২ জন উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১ জন উক্ত হাসপাতালে আছেন।

তাছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছেন ২ জন ডেপুটেশনে আসা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। জনগনের সুবিধার জন্য পৌরসভা হতে ৪ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছে। বিভিন্ন লোকের সাহায্যে রয়েছে ১ জন আয়া। অথচ প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হলেও এটি এখন অনেকটা রোগীবিহীন ফাঁকা পড়ে আছে।


সরজমিনে গতকাল মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ৩য় তলায়প্রসূতি, রিকভারী,নার্স, ডেলিভারী, সার্জন,অপারেশন,ষ্টোর,অটোক্লেভ ও এক্লাম্পীয়া কক্ষ রয়েছে। ২য় তলায় পুরুষ ও মহিলা,নার্স ,ইপিআই,২টি অফিস ও ১ টি ষ্টোর রুম। রোগীদের ওয়ার্ডের বেডে, কবুতরের বিষ্টা,সহ ধুলা-বালিতে আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এলোমেলো ভাবে পড়ে রয়েছে শষ্যা ও চিকিৎসা উপকরণগুলো।

সে সাথে দরজা জানালা গুলোর নিম্ন মানের কাঠের কারনে ভেঙ্গে পড়েছে ও পড়ছে। তবে ভবনের নিচ তলায় ২জন ডাক্তার কিছু রোগীকে আউটডোর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এক্স-রে কক্ষ থাকলে ও মেশিন নেই।

হাসপাতালে আসা রোগী শাহেদা, জেসমিন, ছালাম, আবুলের সাথে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত বছর হয়ে গেল এখানো আমাদের হাসপাতালটি চালু হয়নি। তারা আরও জানান, কোন রকমে চিকিৎসা পেলেও সব ঔষধ মিলে না।

হাসপাতালের পেছনে ২ তলা বিশিষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ও এখন কারো চোখে পড়ে না। তবে প্রতি বছর উক্ত হাসপাতালের জন্য ৩ লক্ষ টাকার ঔষধ বরাদ্দ থাকলে ও রোগীর তুলনায় তা সামান্য।’

ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, ফটিকছড়ি সদর ২০ শয্যা হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত ডাক্তারসহ চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার সরঞ্জাম বরাদ্ধ না থাকায় এটি জনগণের কোন উপকারে আসছে না। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

তাছাড়া পৌরসভাসহ অরো ৪ টি ইউনিয়নের প্রচুর রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। কোন দূর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষনিক যে অপারেশন করার প্রয়োজন তা হয় না।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ইলিয়াছ চৌধুরীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এসব সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় এব্যাপারে কথা হয়েছে,যা সভার কার্যবিবরণীসহ ‘হাসপাতালটির জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি খুব সহসা এটিকে পূর্ণাঙ্গ সেবাদানের জন্য গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *