চট্টগ্রাম, , রোববার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

নীরব জসীম ডেস্ক কন্ট্রিবিউটর

যুক্তরাজ্যে এবারের নির্বাচনে আলোচনায় ৪ বঙ্গকন্যা

প্রকাশ: ২০১৯-১২-১০ ২০:১৭:০২ || আপডেট: ২০১৯-১২-১০ ২০:১৭:০৯

নিউজ ডেস্ক :

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রেক্সিট ইস্যু এবারও প্রার্থীদের নির্বাচনী ফলাফলে প্রভাব ফেলবে। এবারের নির্বাচনে কোনো একক দল ক্ষমতায় যাচ্ছে, নাকি জোটবদ্ধভাবে সরকার গঠন করতে হবে তা নিয়ে শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন দলের চলছে হিসেব-নিকেশ।

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষণ বা জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ এবং জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা ওঠানামা করছে। এমন অবস্থায় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশিরাও। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কমপক্ষে ১০ প্রার্থী লড়ছেন এই নির্বাচনে। তবে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চার নারীকে নিয়েই আলোচনা বেশি হচ্ছে। 

নিজেদের আসন ধরে রাখতে লড়াই করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী, টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ও রূপা হক। আর এবার তাদের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন আফসানা বেগম। বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস আসনে তাকে সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে ধরা হচ্ছে।

টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক :

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। তিনি এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে হ্যামস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন থেকে লড়ছেন। পরপর দু’বার যুক্তরাজ্যেই এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন টিউলিপ। আর এই কারণে টিউলিপের সামনে হ্যাটট্রিক জয়ের হাতছানি দিচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলি দুই দফায় সাংসদ হওয়ার পর ব্রি‌টে‌নের নানা রাজ‌নৈ‌তিক ইস্যু‌তে পার্লামেন্টের ভেত‌রে-বাইরে‌ রীতিমত ঝড় তুলে দিয়েছিলেন। সা‌ড়ে চার বছ‌রের কম সময় দা‌য়িত্ব পালন করেই তি‌নি ব্রি‌টে‌নের রাজনী‌তি‌ ও সংবাদমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু‌তে উঠে আসেন। 

টিউলিপ প্রথমে ইংরেজি এবং পরে রাজনীতি, নীতি ও সরকার বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট দলের বারাক ওবামার প্রচারাভিযানে অংশ নেন। এ ছাড়াও ওয়েস্ট মিনস্টার-১০ এ ভালো বক্তার তালিকায়ও প্রথম বাঙালি এমপি হিসেবে জায়গা করে নেন টিউলিপ।

রূপা হক :

পাবনা মেয়ে রূপা হকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা লন্ডনে। রুপা অধ্যাপনার পাশাপাশি একাধারে লেখক, কলামনিস্ট। শিক্ষক রূপা এর আগে ডেপুটি মেয়র হিসাবে স্থানীয় সরকারে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এমপি নির্বাচিত হন ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের নির্বাচনে। ৪৮ বছর বয়সী রূপা লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে টানা দুই বার এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন।  এবারও তিনি লড়ছেন একই আসন থেকে।

রুশনারা আলী :

১৯৭৫ সালে সিলেট জেলার বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করা রুশনারা আলী মাত্র সাত বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে পাড়ি জমান। ২০১০ সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে ব্রিটিশ মূলধারার রাজনীতিতে প্রথম বাঙালি কোনো রাজনীতিবীদের অভিষেক হয়। এসময় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও শিক্ষাবিষয়ক ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তিনি পার্লামেন্টারি ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য ছিলেন। কনজারভেটিভ সরকারের আমলেও তিনি বাংলাদেশ-বিষয়ক বাণিজ্য দূতের দায়িত্ব পালন করেন।

রুশনারা পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। বাঙালি ভোটারদের সংখ্যাধিক্যের কারণে এ আসন লেবার পার্টির জন্য নিরাপদ হিসাবে বিবেচিত। ৮০ হাজার ভোটারের মধ্যে প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। ২০১৭ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির চার্লট চিরিকোর চেয়ে ৩৫ হাজার ৫৯৩ ভোট বেশি পেয়ে তিনি নির্বাচিত হন। বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস বারার অধীন রুশনারার আসনটি লেবার দলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে এবারও লেবার দলের ঘাঁটিতে বিজয়ের হাসি হাসবেন বঙ্গকন্যা রুশনারা।

আফসানা বেগম :

লেবার পার্টির ঘাঁটি হিসেবে কমিউনিটিতে সবচেয়ে বেশি পরিচিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস সংসদীয় আসন। ১২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাঙালি অধ্যুষিত এই এলাকায় লড়ছেন আফসানা বেগম। 

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে মেয়ে আফসানা বেগমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যে। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আবাসন বিভাগে কর্মরত আছেন। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং লেবার পার্টির লন্ডন রিজিয়নের সদস্য।

পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস সংসদীয় আসনের দুই দশকের লেবার পার্টি এমপি জিম ফিটজপেট্রিক চলতি বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন। লেবার দলের নিরাপদ এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে লড়াইয়ের মধ্যে অনেকটা চমকে দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন তরুণ এই বঙ্গকন্যা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *