চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

এম মাঈন উদ্দিন মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ : আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু

প্রকাশ: ২০১৯-১২-১০ ১৫:৩৩:৫৫ || আপডেট: ২০১৯-১২-১০ ১৫:৩৩:৫৮

মিরসরাই প্রতিনিধি :

মিরসরাইয়ে গবাদিপুশর ভাইরাস জনিত রোগ লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার গবাদিপশু এই ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগে ৮-১০ টি গরু মারা গেছে মিরসরাইতে। জানা গেছে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে লাম্পি স্কিন ডিডিজ আক্রান্ত প্রায় ৪ হাজার গরুকে এ্যান্টি এলার্জিক ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে।


জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গবাদি পশুর মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গবাদি পশুর শরীরে প্রথমে মাংস গুটি গুটি করে ফুলে উঠে। পরবর্তীতে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে। যেখানে আস্তে আস্তে পঁচন ধরতে শুরু করে। চামড়ায় গুটি ছাড়াও গলা ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি খাবার কম খাওয়া এবং পা ফুলে যাচ্ছে অনেক গরুর। মশার মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। মশা যেখানে কামড় দিচ্ছে সেখানে গুটি গুটি আকারে ফুলে যাচ্ছে। এই রোগটি বাংলাদেশে এবারই প্রথম বলে জানা গেছে। উপজেলার দুর্গাপুর করেরহাট, ওচমানপুর ইউনিনের ভাইরাস জনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সব চেয়ে বেশী।


উপজেলার মধ্যম মঘাদিয়া এলাকার আবুল হাশেম বলেন, ৩ মাস পূর্বে তার ৮ মাস বয়সী বাছুরে শরীরে প্রথমে কয়েকটি চামড়া ফুলে গুটি (বসন্ত) উঠে। পরবর্তীতে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। গুটিগুলোতে কিছুদিন পর ঘাঁ দেখা দেয়। স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করলে কিছুটা কমে যায়। কিন্তু এখনো পুরোপুরি বাছুরটি সুস্থ হয়নি বলে জানান তিনি।


দক্ষিণ গোভনীয়া এলাকার মোঃ নুর উদ্দিন বলেন, গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে আমার একটি বাছুরের গলা ফুলে যায়। যেখানে মনে হচ্ছে পানি জমে আছে। এতে করে গরুর খাওয়া কমে যাচ্চে বলে জানান তিনি।

মঘাদিয়া ভূঁইয়াপাড়ার এলাকার আজমল হোসেন জানান, গত কয়েকদিন আগে লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের একটি গরু মারা গেছে। পশু চিকিৎসককে অবহিত করা হলেও সময় মতো আসেনি।

গোভনীয়া গ্রামের শফিউল আলম বলেন, ৭দিন আগে বাছুরের কানে মশার কামড়ে গুটি দেখা দেয়। পরবর্তীতে সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। যেটি ভেতরের দিকে মাংস পঁচিয়ে ফেলতেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় থেকে ওষুধ খাওয়ানোর পরও ক্ষত শুকাচ্ছে না।


উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গবাদিপুশর ভাইরাস জনিত রোগ লাম্পি স্কিন ডিজিজ মোকাবেলায় ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম (এনএটিপি) ফেজ-২ ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টশন ইউনিট (পিআইইডি) এর আওতায় ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২ হাজার ৬০ জন কৃষকের প্রায় ৪ হাজার গবাদি পশুর বিনামূল্যে চিকিৎসা, ২ হাজার ৫’শ সুস্থ গবাদি পশুকে টীকা প্রদান ও ৭ হাজার ২’শ গবাদি পশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে লাম্পি স্কিন ডিডিজ মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার বলেন, গবাদিপশুর ভাইরাস জনিত রোগ লাম্পি স্কিন ডিজিজ মোকাবেলায় উপজেলায় ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ৪টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টীম গবাদি পশুর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইতমধ্যে আমরা ৪ হাজার গবাদি পশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ ক্রমান্বয়ে নিয়ন্ত্রণে আসতেছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *