চট্টগ্রাম, , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

খলিল চৌধুরী সৌদি আরব প্রতিনিধি

সৌদি আরব থেকে ফিরলেন আরও ১০৯ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ২০২০-০১-১৮ ১০:৪০:০৫ || আপডেট: ২০২০-০১-১৮ ১০:৪০:১৪

খলিল চৌধুরী, সৌদি আরব প্রতিনিধি :

১৭ জানুয়ারি ২০২০: মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে আরও ১০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে তারা দেশে ফেরন। এ নিয়ে এ বছরের ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।

বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের মাঝে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগীতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরী সহায়তা প্রদান করা হয়।

গতকাল ফেরা সিলেট জেলার তালেব (৩০) মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না। রাতেই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় তালেবকে। পাঁচ বছর পূর্বে শ্রমিক হিসাবে সৌদি আরর গমন করেন তালেব। কিন্তু গত দুই মাস পূর্বে সেখান মানসিক ভারসাম্য হারান।

মাত্র দুই মাস আগে নোয়াখালীর আজিম হোসেন গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। পাসপোর্টে তিন মাসের ভিসা থাকা সত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, বাজার করার জন্য মার্কেটে যাবার পথে পুলিশ আটক করেন। গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের সাথে নিয়োগকর্তা (কফিল) এর কথা বলার পরেও তাকে দেশে পাঠানো হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের রুহুল আমিন, কুমিল্লার ফিরোজ হোসেন ও মানিক, শরিয়তপুরের মিলন, যশোর জেলার মোসলেম উদ্দিন, বগুড়ার মেহেদি হাসান, গাজীপুরের রাজিবসহ ১০৯ বাংলাদেশি বেশিরভাগেরই এমন অবস্থা।

দেশে ফেরা কর্মীদের অভিযোগ, আকামা তৈরীর জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তারকৃত কর্মীর দায়-দায়িত নিচ্ছেনা।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সনে ২৫ হাজার ৭৮৯ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি ফিরলেন দেশটি থেকে। ফেরত আসাদের বর্ণনা প্রায় একইরকম। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন এমন লোকও আছেন। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়।

শরিফুল হাসান গত বছরের পুরো পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত
আরব আমিরাত থেকে ছয় হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে সাত হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে দুই হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে দুই হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন শূন্য হাতে ফিরেছেন যাদের পরিচয় ডিপোর্টি।


এই মানুষগুলোর পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। ফেরত আসা প্রবাসীদের আমরা শুধু বিমানবন্দরে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছি না, তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কাউন্সিলিং, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবেও পাশে থাকতে চাই। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে কাজটি করতে হবে।

পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *