চট্টগ্রাম, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin

চকরিয়া জনতা শপিং সেন্টারের মালিকের প্রতারণার ফাঁদে ১৭ ব্যবসায়ী!

প্রকাশ: ২০২০-০৩-০৪ ২১:০২:৩১ || আপডেট: ২০২০-০৩-০৪ ২১:০২:৩৮


চকরিয়া অফিস :
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের জনতা শপিং সেন্টারের মালিক পক্ষের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন ১৭ ব্যবসায়ী। ফলে এসব ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে দীর্ঘ একযুগ ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ব্যবসায়ীদের নামে চুক্তিবদ্ধ হওয়া দোকানের প্লট বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো নানাভাবে তদের হয়রানি করছেন মালিকপক্ষ। অবশেষে ১৭ ব্যবসায়ী নিরুপায় হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। দোকানের প্লট বুঝে দিতে এবং ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতিপুরণ চেয়ে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ (২য়) আদালতে একটি মামলা (যার মামলা নং ৬৯/২০২০) দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা।

এ মামলায় জনতা শপিং সেন্টারের মালিকগনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বুধবার (৪ মার্চ) বিকালে চকরিয়া পৌরসদরের অভিজাত রেড সিলি কনভেনশন হলরুমে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ক্ষতিগ্রস্থ ১৭ ব্যবসায়ীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেন দোকানের প্লট বঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ও চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম। এসময় দোকানের প্লট বঞ্চিত অন্যান্য ১৭ ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।


ক্ষতিগ্রস্থ ১৭ ব্যবসায়ীর পক্ষে চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া পৌরশহরের জনতা মার্কেটের মালিক মরহুম মোজাহের আহমদ কোম্পানী জীবিত থাকা অবস্থায় চিরিংগা মৌজার বিএস ২৩৩ নম্বর খতিয়ানের ৩১২ ও ৩১৩ দাগের উপর নির্মিত নিউ জনতা সুপার মার্কেটের প্রথম তলায় ১৬টি ও ২য় তলায় ৩টিসহ মোট ১৯টি দোকানের সালামী দিয়ে ও দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিবদ্ধ হয়ে দোকানের মালিকানা ক্রয় করে ১৭ ব্যবসায়ী।

পরবর্তীতে ১৯৯৭-২০০৮ সাল পর্যন্ত এসব ব্যবসায়ীরা শান্তিপুর্নভাবে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছিলেন। মোজাহের আহমদ কোম্পানীর মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশদের সাথেও নতুন মার্কেটে প্লট বুঝে পাওয়ার জন্য চুক্তিনামা সম্পাদন করেন এসব ব্যবসায়ীরা।


এদিকে জমির মালিক মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ হিসেবে তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েরা চট্টগ্রামের ১২৫ চট্টশ^রী রোড, কাজীর দেউরি ভিআইপি টাওয়ারের মদিনা প্রপার্টি ডেভেলাপমেন্ট এর মালিক হাজী মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ, মুসলিম কবির ও মোহাম্মদ আবু ছগিরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পুর্বের নিউ জনতা সুপার মার্কেট এর স্থলে নতুন জনতা শপিং সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।


তিনি আরও বলেন, নিউ জনতা সুপার মার্কেটের মালিক মোজাহের আহমদ কোম্পানীর সাথে ১৭ ব্যবসায়ীর সালামী দিয়ে চুক্তি থাকায় ওই চুক্তি মতে নির্মিতব্য জনতা শপিং সেন্টারের নির্ধারিত দোকান ব্যবসায়ীর বুঝিয়ে দেয়ার শর্তে মোজাহের আহমদ কোম্পানীর ওয়ারিশগণের সাথে নতুনভাবে চুক্তিনামা সম্পাদন করেন ১৭ ব্যবসায়ী। ওই চুক্তিনামায় মরহুম মোজাহের আহমদ কোম্পানীর দেওয়া পুর্বের চুক্তিনামার সকল শর্ত মেনে নিয়ে নতুনভাবে আর কোন প্রকার টাকা দাবী না করার অঙ্গিকারনামা দেয়া হয় চুক্তিবদ্ধ ব্যবসায়ীদের।


জনতা শপিং সেন্টারে স্ব স্ব দোকানের প্লটের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়ার শর্তে মার্কেট মালিক ও ১৭ দোকান গ্রহিতার মধ্যে নোটারী পাবলিক কক্সবাজারের মাধ্যমে ৩শত টাকার লিখিত স্ট্যাম্পে চুক্তিনামাপত্র সম্পাদন করা হয়।

চুক্তিনামায় পূর্বের ১৭ দোকানঘর মালিকের পক্ষে আদালতে মামলা থাকায় জনতা শপিং সেন্টারের ১ম তলায় ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১৫৭, ১৫৮ নম্বর দোকান এবং ২য় তলায় ১০০, ১০১, ১০২ নং দোকানঘরসহ মোট ১৯টি দোকান মার্কেট মালিকদের সাথে নতুন করে কোন প্রকার বায়নানামা চুক্তি না করার কথাও উল্লেখ করা হয়।

চুক্তিনমায় আরো শর্ত ছিল মোজাহের কোম্পানীর ওয়ারিশগণ ১ বছরের মধ্যে নবনির্মিত জনতা শপিং সেন্টারের পুর্বের দোকানের প্লট স্ব স্ব মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

কিন্তু জনতা শপিং সেন্টারের মালিক ও ডেভেলাপমেন্ট কোম্পানী ওই দোকান গুলো পূর্বের মালিকদের কাছে হস্তান্তর না করে গত ১২বছর ধরে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হয়রানি করে আসছেন। এ কারণে ওই ১৭জন দোকান মালিক তাদের দোকানের প্লট বুঝে না পাওয়ায় চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকরা প্রশাসনসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *