চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

হিল্লোল দত্ত আলীকদম, বান্দরবান প্রতিনিধি

আলীকদমের ফুল ঝাড়ুর চাহিদা এখন দেশের বাইরেও

প্রকাশ: ২০২০-০৩-০৭ ২০:১৭:৪৮ || আপডেট: ২০২০-০৩-০৭ ২০:১৭:৫৯



হিল্লোল দত্ত, আলীকদম প্রতিনিধি :
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় জন্মানো ফুল ঝাড়ু এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে।

পাহাড়ের ফুল ঝাড়ু এখন পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই ফুল ঝাড়ু বিক্রি করে অনেক দরিদ্র ও শ্রমজীবী পরিবার আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের আর্থিক সংকট মোকাবেলায় ফুল ঝাড়ু সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

বহু শ্রমজীবী মানুষের সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান। এখানকার স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ফুল ঝাড়ু দেশের সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে।


শুকনো মৌসুমে আলীকদমের পাহাড়ী এলাকার ঝোঁপ-জঙ্গল থেকে লোকজন ফুলঝাড়ু সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে আঁটি বেধে বিক্রি করে । আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে অল্প অল্প ক্রয়করে প্রচুর পরিমান মজুদ করার পর বাজারে চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ট্রাক ভর্তি করে রপ্তানী করছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।


কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হচ্ছে বিপুল পরিমান ফুল ঝাড়ু। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদিআরব ও ডুবাই তে ফুল ঝাড়–র চাহিদা বেশি। ফুল ঝাড়ু সংগ্রহে অনেক দরিদ্র মানুষের কর্ম সংস্থানের পথ সৃষ্টি হয়েছে।

অনেক ব্যবসায়ী ফুল ঝাড়ু কিনতে অগ্রীম টাকা দেন। বাজারে প্রতি হাজার শলাকা ফুল ঝাড়ুর মূল্য ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। একজন লোক দৈনিক এক হাজার থেকে বার”শ শলাকা ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করতে পারে।

সেই হিসেবে একজন লোকের প্রতিদিনের আয় দাড়ায় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। বর্তমানে আলীকদমের বিভিন্ন এলাকার পাঁচ শতাধিক লোক কোনো না কোনো ভাবে এ পেশায় রয়েছেন।


এদিকে গত একমাস যাবৎ ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ফুল ঝাড়ু সংগ্রহ করে জমি বর্গা নিয়ে কড়া রোদে ভালো করে ফুলঝাড়ু শুকিয়ে নিচ্ছেন রপ্তানির উদ্দ্যেশ্যে। উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ফুল ঝাড়ু শুকানোর এমন দৃশ্য চোখে পড়ার মত। এই ফুলঝাড়ু রপ্তানির মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব পাচ্ছে।

ফুলঝাড়ু ব্যবসায়ীরা জানান,এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ফুল ঝাড়ুর দাম বেশি। তবে চাহিদামত ফুল ঝাড়ু রপ্তানী করতে পারলে চালান প্রতি লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়। ব্যবসায়ীদের দাবী, পাহাড়ে যদি জুমের আগুন দেওয়া বন্ধ করা যায় তাহলে পাহাড়ে ফুলঝাড়ুর আরো বেশি উৎপাদন বাড়বে।


লামা বনবিভাগের তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার সামশুল হুদা জানান, আলীকদম উপজেলা থেকে ফুলঝাড়ু রপ্তানী করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করছে।

বছরের ছয়মাস শীতকাল থেকে এই ফুলঝাড়ুর ব্যবসাটা শুরু হয়। আলীকদমে যে পরিমান ফুলঝাড়– প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে তা থেকে সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পাচ্ছে। এখন মানুষ তামাকের পরিবর্তে ফুলঝাড়ু সংগ্রহ ও বিক্রির দিকে ঝুঁকছেন । এতে তারা ভালো লাভও পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *