কাইছার হামিদ
প্রকাশ: ২০২০-০৫-১৯ ২৩:৪৫:১০ || আপডেট: ২০২০-০৫-১৯ ২৩:৪৫:১৩
কাইছার হামিদ| হঠ্যাৎ করেই ব্রয়লার মুরগির বাজারে আগুন। এখন কেজি প্রতি খুচরা বাজারে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দাম শুনে না কিনেই মলিন মুখে ফিরে যাচ্ছেন নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ।
গত ১০ দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পোল্ট্রি মুরগির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে কেজি ১৮০ টাকা ছুঁয়েছে। খুচরার পাশাপাশি ফার্মেও পোল্ট্রি মুরগির দাম বেড়েছে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন ফার্মে দ্বিগুণের বেশি দামে পেল্ট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে একই অবস্থা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশ করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে পোল্ট্রি মুরগির চাহিদা ব্যাপক হারে কমে যায়। ফলে দামও কমে। করোনার আগে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পোল্ট্রি করোনার শুরুতে ৯০ থেকে ১১০ টাকায় নেমে আসে। তবে রোজার শুরুতে কিছুটা দাম বাড়ে। এতে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে পোল্ট্রি মুরগি।
বেশ কিছুদিন এই দাম স্থির থাকার পর চলতি মাসের ৮ তারিখে এক লাফে পোল্ট্রির দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা হয় যায়। এরপর ১২ মে কিছুটা দাম কমে ১৪০ টাকায় নামে। তবে ১৫ মে আবার দাম বেড়ে কেজি ১৭০ টাকায় পৌঁছে যায়। এখন তা আরও বেড়ে ১৮০ টাকা ছুঁয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে পোল্ট্রি মুরগির দাম যে হারে বাড়ছে তাতে ঈদের আগে হয়তো কেজি ২০০ টাকা হয়ে যাবে। কারণ এখন গরু ও খাসির মাংসের অনেক দাম। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে গরু ও খাসির মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব না। ফলে ঈদের দুই-তিনদিন আগে পোল্ট্রি মুরগির চাহিদা আরও বেড়ে যাবে।
হঠাৎ পোল্ট্রি মুরগির অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উৎপাদকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের শুরুতে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা ব্যাপক হারে কমে যায়। এতে ফার্ম মালিকরা লোকসানে কম দামে মুরগি বিক্রি করেন। যে কারণে তারা নতুন বাচ্চা উৎপাদনে যাননি। আগের যে বাচ্চা ছিল এখন সেই বাচ্চা বড় করে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমেছে।
পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী সমিতির চট্টগ্রাম দক্ষিণ, বান্দরবান ও কক্সবাজার আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক ও পোল্ট্রি খামারী সমন্বয় জাতীয় কমিটি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক তৈয়ব তাহের বলেন, করোনার কারণে বাচ্চা উৎপাদন করেনি অনেক ফার্ম মালিক। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতে দাম ছিল খুব কম। যার কারনে অনেক মালিক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উৎপাদনে যায়নি। দশ দিন আগে আমি নিজেই আট হাজার পিচ্ বিক্রি করেছি ৯০ টাকা কেজিতে। এখন পাইকারী ১৪০/১৪৫ টাকা। তবে বড় মুরগী নেই, ২ কেজি হলে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হবে।
রাজধানীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় আমাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে খবর নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে পোল্ট্রি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা দুদিন আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। দাম বাড়ার এই চিত্র উঠে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনেও।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে পোল্ট্রি মুরগির দাম ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।