চট্টগ্রাম, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin

পরিকল্পিত নগরী হবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২০২১-০১-২৩ ২১:২৩:৫৬ || আপডেট: ২০২১-০১-২৩ ২১:২৪:০৩

কর্ণফুলীর পাড় থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত দক্ষিণ চট্টগ্রাম। এক সময়ের অবহেলিত এ এলাকাজুড়ে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা। দক্ষিণ চট্টগ্রামে বর্তমানে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। এরমধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, ইকোনোমিক জোন, শিল্প পার্ক, বিদ্যুৎপল্লী, এশিয়ান হাইওয়ে এবং দোহাজারি-ঘুনধুম রেল লাইন। এসব কর্মযজ্ঞের ফলে নগরীর মত দক্ষিণ চট্টগ্রামেও মানুষের চাপ বাড়বে। প্রয়োজন হবে আবাসনের।

তাই এখন থেকেই যদি দক্ষিণ চট্টগ্রামকে নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তাহলে দক্ষিণ চট্টগ্রামও একটি পরিকল্পিত নগরী বা উপ-শহর হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, এসব সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত উপ-শহর করতে মাস্টার প্ল্যান করা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

জানতে চাইলে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘এক সময় দক্ষিণ চট্টগ্রাম অবহেলিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনার জায়গা এই দক্ষিণ চট্টগ্রাম। এই সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে নিয়ে মাস্টার প্ল্যান করা হবে। আমার বাবা মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বেঁচে থাকতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সব সময় বলতেন। প্রধানমন্ত্রীও এই এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের কাজ চলছে। এটা শুধু বাংলাদেশে না, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম টানেল। এই টানেলকে ঘিরে দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, দোহাজারি-ঘুনধুম রেল লাইন হচ্ছে, এশিয়ান হাইওয়ে লিংকসহ অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া, আনোয়ারার সাইডে অনেক কাজ চলছে। কোরিয়ান ইপিজেড আছে, চাইনিজ ইকোনমিক হচ্ছে, কাফকো, সিইউএফএল, ড্যাপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে।’
কর্ণফুলী নদীর অপর পাশে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও লন্ডনসহ অনেক দেশে শহরের অপর পাশও উন্নত হয়ে গেছে। আমাদেরও এখন সময় এসেছে। ধীরে ধীরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন শুরু হয়েছে। আনোয়ারা, কর্ণফুলী এই এলাকাকে উপ-শহর করতে একটি প্রকল্প নেয়ার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাথে কথাও হয়েছে।

এ সম্পর্কে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘সিডিএ’র নতুন মাস্টার প্ল্যানে শহরের বাইরে উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের কিছু এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে এখন অপরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ ইচ্ছে মত স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এভাবে চলতে থাকলে একটা সময়ে এসে গ্রামেও জলাবদ্ধতা সমস্যা দেখা যাবে। তাই এখন গ্রাম নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।’

সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে বর্তমানে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। সবকিছু মিলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান সরকারের মহা পরিকল্পনা রয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে ঘিরে। এই মহা পরিকল্পনার মধ্যে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন দিয়ে শুরু করেছি। কিন্তু মানুষের যে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা তা আমরা এখনো বাস্তবায়ন শুরু করতে পারিনি।’

সিডিএ’র সাবেক এ চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘কক্সবাজারের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম শহরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের মাঝের এ এলাকায় আর কোন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করার সুযোগ নেই।

তাই কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের মাঝে সমন্বয় করে অর্ধেক এলাকা কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং বাকি অর্ধেক এলাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করা হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। কোন সংস্থা ছাড়া পরিকল্পনা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন সিডিএ’র সাবেক এই চেয়ারম্যান। সূত্র: পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *