চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

রোজায় নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন!

প্রকাশ: ২০২২-০৪-০৩ ১৬:২৭:০৮ || আপডেট: ২০২২-০৪-০৩ ১৬:২৭:১০

বীর কণ্ঠ ডেস্ক|
রমজানকে ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গতকালও ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বেগুন আজ ৮০ টাকা, ৬০ টাকার শসা ৮০ টাকা, লেবুর ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, আলু ২০, টমেটো ৩০, পটল ৫০, লাউ (পিস) ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উইম্যান কলেজ মোড় এলাকার সবজি বিক্রেতা আজিজ বলেন, রমজান আসলে পাইকারীরা বেগুন, শসা, টমেটোর দাম বাড়ায়। আমরা বাড়তি দরে পণ্য কিনে আনি তাই বাড়তি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

এদিকে ছোলা ৭০ থেকে ৭২ টাকা, চিড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেসন ১০০ টাকা, মুড়ি ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ডিম ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এদিকে বেশি বেড়েছে মরিয়ম খেঁজুরের দাম। গতকালও ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া মরিয়ম খেঁজুর আজ ৬শ থেকে ৬২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া রসুন ১২০ ও মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিলিটার সয়াবিন তেল ১৬৫ থেকে ১৬৮ ও পাঁচ লিটার তেল ৭৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। ১৫৫টাকার ব্রয়রার মুরগি ১৭০, ২৮০ থেকে ৩শ টাকায় বিক্রি হওয়া সোনালী মুরগি ৩৪০ ও লেয়ার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গতকালও ৬৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭২০ ও খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, ফলের বাজারেও আগুন।সারাদিন রোজার শেষে ইফতারের টেবিলে দেশি-বিদেশি ফল রাখেন অনেকেই। তরমুজ, পেঁপে, বেল, ডাব, কলা, মাল্টা, কমলা, আপেল, আঙুর, নাসপতি, আঙুর, পেঁয়ারাসহ বিভিন্ন ফলফলাদি থাকে ইফতারের টেবিলে। ইফতার-সেহেরিতে ব্যবহৃত নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ফলের বাজারও। ইফতারে ফলের স্বাদ নিতে দোকানে ভিড় জমালেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না ক্রেতারা। আমদানিকারকদের ‘অজুহাত’ কম আমদানি আর বন্দরের বাড়তি চার্জ।। অন্যদিকে ফলের দাম আরো বাড়ার সংকেত দিলেন খুচরা বিক্রেতারা।

বাজারে দুদিন আগেও ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁপে আজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি বেল আগে ছিল পিস ৫০ টাকা অথচ আজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি কলার ডজন ৯০ টাকায়, ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া আঙ্গুর আজ ২৪০ টাকায়, ১৫০ টাকার মাল্টা ১৮০ ও ২০ টাকা বেড়ে আনার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া প্রতিকেজি আপেল ৩০ টাকা বেড়ে ১৮০, নাসপাতি ২১০, ৫০ থেকে ৬০ টাকা জোড়ায় বিক্রি হওয়া আনারস আজ ১২০, তরমুজ আকারভেদে ১২০ থেকে ২০০, পেয়ারা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আজ রবিবার নগরের একেখান, অলংকার ও নাসিরাবাদ এলাকায় বেশকিছু ফলের খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে।

একেখান এলাকায় একটি খুচরা দোকান থেকে ফল কিনছিলেন ইরহাম উদ্দিন। তিনি বলেন, রোজা তাই বাসার জন্য ফল কিনতে এসেছি। একদিনের ব্যবধানে ফলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে আমি ৭০ টাকায় পেঁপে কিনেছি। আজ আমার কাছে ১২০ টাকা দাম চাচ্ছে। আপেল ১৮০ টাকা চাচ্ছে। অবাক লাগে। এভাবে রোজাকে পুঁজি করে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়ার কোন মানেই হয় না।

নগরের নাসিরাবাদ এলাকার ফল বিক্রেতা মো. হাসান বলেন, পাইকারেত্তুন আঁরা বেশি দামে মাল কিনিয়েরে বেচিদ্দি। কলার পন আগে আছিল ৫শ টিইয়্যা, আজিয়া আঁরা ৭’শ টিয়্যা দি কিনি আইন্নি। ফল তো বিদেশেত্তুন আনন ফরের। ব্যবসায়ী অক্কলের খরচ বাড়ি গিয়্যে। ফলের দাম বাড়ন মানে আঁরা বেশি লাভ গরির হিয়্যান ন। খরচা বাড়তি হিতাল্লায় দামও বাড়তি। ফলের দাম আরো বাড়িবো। (পাইকারের কাছ থেকে আমরা বেশি দামে মাল কিনে বিক্রি করছি। কলার পন আগে ৫’শ টাকা ছিল। এখন ৭’শ টাকা। তাছাড়া ফল তো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়ে গেছে। ফলের দাম বাড়া মানে আমরা বেশি লাভ করে ফেলছি তা কিন্তু নয়। ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়েছে তাই ফলের দামও বেড়েছে। সামনে ফলের দাম আরো বাড়বে।

চট্টগ্রামের ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফলের দাম বাড়বে না কেন? দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি জাহাজ ভাড়া গুণে আসছি। এখনও গুণছি। অথচ করোনা শেষ। সবদিকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবুও জাহাজ ভাড়া কমানোর কোন উদ্যোগ নেই। ১ হাজার ডলারের ভাড়া এখন তিন হাজার ডলার। তার উপর হিমায়িত কনটেইনারে ফল রাখতে হয়। আমরা বন্দরে বেশিদিন পণ্য রাখতে পারিনা। বাড়তি সময় রাখলে তিনগুণ বাড়তি ভাড়া গুণতে হয়। সবমিলিয়ে আমাদের আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। তাই ফলের দামটা বাড়তি। শুধু তাই নয়, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ফল আমদানি করার ক্ষেত্রেও চিন্তা-ভাবনা করতে হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মত ফল আমরা আমদানি করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *