admin
প্রকাশ: ২০২২-১১-২৮ ০০:০৮:৪৪ || আপডেট: ২০২২-১১-২৮ ০০:০৮:৪৭
লোহাগাড়া(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি| চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি লম্বাশিয়া এলাকায় পড়ে আছে হাতির নিথর দেহ। সকালে স্থানীয় চাষীরা দেখতে পেয়ে বন কর্মকর্তাদের খবর দেয়। ২৭ নভেম্বর রবিবার সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৃত হাতিটির বয়স দুই বছর। উচ্চতায় ৫ ফুট ২ ইঞ্চি ও লম্বায় ৮ ফুট। মৃত হাতিটির শোরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
এদিকে হাতির মৃত্যুকে ঘিরে চারদিকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। উৎসুক লোকজন দূর দূরান্ত থেকে দেখতে আসে হাতির নিথর দেহ। সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সাতগড় বনবিটের লম্বাশিয়া এলাকার জলাশয়ে হাতির মৃত দেহ পড়ে রয়েছে। হাতির মৃতদেহের আশ পাশে রয়েছে চার/পাঁচটি বালুর স্তূপ। লম্বাশিয়া এলাকার সাতগরিয়া ছড়া থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন ও স্কভেলটর দিয়ে প্রভাবশালী মহল বালু উত্তোলন করেন। যার ফলে গর্তের সৃষ্টি হয়। হাতি মৃত্যুর জলাশয়টিও বালু উত্তোলনের কারনে হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সেলিম উদ্দিন। স্থানীয়রা ধারনা করছেন, মৃত হাতিটি জলাশয়ে নেমে আর উঠতে পারেননি। যার ফলে হাতির মৃত্যু হয়েছে। হাতি মৃত্যুর ঘটনায় বালু উত্তোলন শ্রমিরা কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্ধারা।
সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম হাওলাদার বলেন, এ এলাকায় আমরা বনায়নের জন্য চারা রোপন করছি। হাতি মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিকরা খবর দিলে আমরা আসি এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ছড়া ও পাহাড় কেটে বালু উত্তোলনের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
বনকর্মীরা জানান, হাতিটির আনুমানিক বয়স দুই বছর হবে। এটি একটি মেয়ে হাতির দেহ।
ওই হাতির মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে, চুনতি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল, লোহাগাড়া উপজেলার উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরীসহ একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।
চুনতি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, আমরা ধারনা করছি দুই বছর বয়সী হস্তি শাবকের মৃত্যুটি জলাশয়ে পড়ার কারনে হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলার উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। হাতির দলের সঙ্গে মৃত হস্তিশাবকটি এসেছিল। জলাশয়ে পড়ে আর উঠতে পারেন নি। সঙ্গীরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টাও করেছিল। কারন মৃত হাতির শোরে আঘাতে চিহৃ রয়েছে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে জলাশয় সৃষ্টি হয়। ওই জলাশয় গভীর হওয়ায় হাতিটির মৃত্যু হয় বলে জানান স্থানীয় লোকজন। আবার অনেকেই ধারনা করছেন, বালু উত্তোলনকারীরা বা চাষীরা ধান বাঁচাতে ফাঁদ পেতেছে। যার কারনে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
হাতির মৃতদেহটি মাটিতে পুঁতে দেয় বন বিভাগ।