admin
প্রকাশ: ২০২৩-০৫-১৬ ০০:৪৮:৩৯ || আপডেট: ২০২৩-০৫-১৬ ০০:৪৮:৪৫
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি |
প্রবাল দ্বীপটির সর্বত্রই ছড়ানো ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন। এখন সেই সব সরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা।
সেন্ট মার্টিনের পূর্ব পাশের জেটি ঘাট দিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই মূল বাজার। আনুমানিক সাড়ে ৩০০ দোকান রয়েছে এটিতে। বাজারের পাকা দোকানগুলো অক্ষত থাকলেও আধপাকা এবং টিনশেড দোকানগুলোর ছাউনি উড়ে গেছে। কিছু কিছু দোকানের অংশ বিশেষ ভেঙে পড়েছে।
সোমবার বিকালে বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিকরা ব্যস্ত সংস্কারে। কয়েকটি দোকানও খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। সেসব দোকান ঘিরে মানুষের আনাগোনা বলে দিচ্ছে জীবনের ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন দ্বীপবাসী।
কথা হয় বাজারের ব্যবসায়ী নাহিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার মুদি দোকানের অর্ধেক অংশ ভেঙে গেছে। উড়ে গেছে টিন। যা মালামাল ছিল তাও বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। যেটুক অবশিষ্ট আছে তা নিয়েই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
আরেক ব্যবসায়ী আবদুল মালেক জানান, বাজারের প্রায় দেড় শতাধিক দোকান নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পশ্চিম পাড়ার জেলে রফিকুল হুদা বললেন, সাগরে মাছ ধরে সংসার চালান তিনি। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তার পরিবার। ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। ফিরে এসে দেখেন থাকার ঘরটি ভেঙে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচেই দিন কাটছে।
পুরো দ্বীপ মোখার তাণ্ডবে শ্রীহীন হয়ে পড়েছে জানিয়ে কোনারপাড়া এলাকার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, আগের অবস্থায় ফিরতে আরও অনেক সময় লাগবে।
কোনারপাড়ার কটেজ মালিক আবু তালেব জানান, ১০ কক্ষের কটেজটির টিন উড়ে গেছে। একটি অংশ ভেঙেও গেছে।
দ্বীপের ১ হাজার ২০০টি ঘর ও কটেজ ভেঙে গেছে জানিয়ে সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এর মধ্যে বসত ঘরই ধ্বংস হয়েছে এক হাজার। এসব ঘরের মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। জেলা প্রশাসক দ্বীপ পরিদর্শনে এসে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। একই সঙ্গে প্রশাসনের সহযোগিতায় ইউনিয়নের পক্ষে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
দ্বীপের ২ হাজারের বেশি বড় গাছ ভেঙে গেছে বলেও জানান চেয়ারম্যান।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, দ্বীপের মানুষকে প্রাথমিকভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হবে। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের মূল আঘাতটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ওপর পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকনাফ উপজেলায়ও কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, টেকনাফের অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় ৩ হাজার ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।