চট্টগ্রাম, , মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

admin

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক, সচেতন ও সোচ্চার হোন

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-০৯ ০৯:৩৭:২৮ || আপডেট: ২০১৭-০৯-০৯ ০৯:৩৭:২৮

 

কাফি কামাল:  বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, সত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে, মানবিকতার স্বার্থে, অধিকার বঞ্চিত ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বার্থে এ লেখাটি লিখতে বাধ্য হলাম।

 

■ ক. রোহিঙ্গাদের যারা সাহায্য দিতে চান তারা সম্ভব হলে নিজে, নইলে পরিচিত বিশ্বস্ত ব্যক্তি বা সংগঠনের মাধ্যমে সাহায্য দিন। রোহিঙ্গাদের নিয়ে যেন সাহায্য ব্যবসায় পরিণত না হয়। মনে রাখবেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সংগৃহিত সাহায্য তছরুপ ঘটনা ঘটলে বা ঘটতে থাকলে সাহায্য দাতারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। যা রোহিঙ্গাদের বিপদে ফেলবে, মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস সংকুচিত হয়ে যাবে। এ ধরনের ঘটনা কাউকে করতে দেবেন না।

 

■ খ. এই ধরনের পরিস্থিতিতে সবখানেই দেখবেন কিছু মানুষ তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। যারা বাংলাদেশে আগে ঢুকতে পেরেছে, বাজারঘাট ও রাস্তার আশপাশে অবস্থান নিতে পেরেছে তারাই এ তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। দাতারা ত্রাণ নিয়ে যাবার পথে তারা প্রথমেই সামনে পড়েন এবং সাহায্য পান। কিন্তু যারা শেষের দিকে বাংলাদেশে ঢুকেছেন তারা নিশ্চয় দূর থেকে এসেছেন। বাংলাদেশেও তারা পেছনের দিকে পড়েছেন। সীমান্তের এক্কেবারে কাছে বা তুলনামূলক প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থান করতে হচ্ছে। সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে যারা যাচ্ছেন তারা এই পিছিয়ে পড়াদের সাহায্য করার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে সঠিক লোকের হাতে সাহায্য পৌঁছাতে স্থানীয় শিক্ষিত সমাজের ভূমিকা প্রয়োজন।

 

■ গ. চট্টগ্রামের বাইরে থেকে যাওয়া সাহায্য দাতাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভাষাগত দূরত্ব রয়েছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই বুঝাতে পারবে না, সাহায্য দাতারা অনেকে বুঝতে পারবে না। তাই বেশি অসহায়দের খুঁজে বের করা এবং সঠিকভাবে সাহায্য বিতরণের জন্য বাংলা ভাষাভাষিরা স্থানীয় সাংবাদিক-শিক্ষক-সংস্কৃতিকর্মীদের সাহায্য নিতে পারেন। একইভাবে স্থানীয় সাংবাদিক-শিক্ষক-সংস্কৃতিকর্মীদেরও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

 

■ ঘ. রোহিঙ্গাদের এখন নগদ টাকার চেয়ে খাবার, ঔষুধপত্র, আশ্রয়ের জন্য পলিথিন-ত্রিপল এবং নিত্যব্যবহার্য জিনিষের বেশি প্রয়োজন। তাই তাঁবু খাটানোর জন্য মোটা পলিথিন, ত্রিপল, প্লাস্টিকের মাদুর, হারিকেন, বিছানার চাদর, বালিশ, ব্যবহৃত কাপড়-ছোপড় বিতরণ করুন।

 

■ ঙ. রোহিঙ্গা আশ্রিতদের উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু। তাদের শিশুখাদ্য প্রয়োজন। তাই চাউল, ডাল, লবন, শুকনো খাবার, চিড়া-মুড়ি, আখের গুড়, শিশু খাদ্য বিতরণ করুন। দূর থেকে বহন করে নেয়ার চেয়ে কক্সবাজার থেকেই সেগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।

 

■ চ. রোহিঙ্গাদের অনেকেই আহত অবস্থায় বাংলাদেশে ঢুকেছেন। অনেক রোগাক্রান্ত লোকজন থাকাটাও স্বাভাবিক। তাই তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। নগদ টাকার চেয়ে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা করুন। এক্ষেত্রে চিকিৎসক বন্ধুদের ছুটির দিনে তাদের নিয়ে উপদ্রুত এলাকাগুলোতে গিয়ে স্বাস্থ্যগত পরামর্শ ও প্রাথমিক ঔষুধ বিতরণ করতে পারেন।

 

■ ছ. রোহিঙ্গা নারীরা আপনার-আমার মা, বোন ও মেয়ের মতোন। তাদের সে দৃষ্টিতেই দেখবেন। অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের ধর্ষন, পতিতাবৃত্তিতে জড়ানো বা বিয়ে করবেন না। কাউকে তেমনটা করতে দেবেন না। রোহিঙ্গা মা-বোনদের ইজ্জতের হেফাজত করুন। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী ও শিক্ষিত সমাজকে সতর্ক থাকতে হবে।

 

■ জ. রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী এখন চরমভাবে বিপদগ্রস্ত, অসহায়। এ অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের সঙ্গে আনা গরু-ছাগল, স্বর্ণালংকার কমদামে ক্রয় বা লুটপাট হবে সবচেয়ে অমানবিক। এটা কেউ করবেন না, কাউকে করতেও দেবেন না।

 

■ ঝ. বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আঙুলের ছাপসহ ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও স্থানীয় প্রশাসনের যেমন উদ্যোগ নিতে হবে। একইভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের এ ব্যাপারে সহযোগিতা প্রয়োজন।

 

■ ঞ. মানবতার পরিচয় দেয়া যেমন জরুরি, তেমনি রাষ্ট্রীয় নিররাপত্তার দিকটা খেয়াল রাখাও কম জরুরি নয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থান নির্দিষ্টকরণ প্রয়োজন। কক্সবাজার শহর ও চট্টগ্রাম অভিমুখে যেন তারা রওনা না দেয় সেটা তাদের বুঝাতে হবে। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে নজরদারি করতে হবে। কারণ সেটা হলে আমাদের স্থানীয় অধিবাসীরা নানা ধরনের সামাজিক সমস্যার মুখে পড়বেন। একপর্যায়ে মানবতাবোধ হারিয়ে যাবে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। সবচেয়ে বড় বিষয় সে সুযোগটা নিয়ে দেশি-বিদেশী অপশক্তি অশুভ তৎপরতা শুরু করতে পারে।

 

■ ট. অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পার, কক্সবাজার শহর ও চট্টগ্রামের দিকে যাতায়াতে সহযোগিতা করবেন না। এটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, আর্থসামাজিক বিশৃঙ্খলাসহ নানামুখী দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণ হতে পারে। এটা কেউ করবেন না ও কাউকে করতে দেবেন না।

 

■ ঠ. আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা গণমাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় পরিচয়কে মুখ্য করে তুলবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় পরিচয়কে মুখ্য করে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ রোহিঙ্গা হিন্দুদের একটি বড় অংশও কিন্তু জীবনরক্ষার্থে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মনে রাখবেন, ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য হলে দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা তৈরী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মানবতাকে বড় করে দেখুন এবং দেখান।

 

■ ড. গুজবের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। বাংলাদেশ যুদ্ধ শুরু করেছে, অমুক-তমুক দেশ বার্মার বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঁশিয়ারী দিয়েছে, অস্ত্র ও সৈন্য পাঠাচ্ছে- এ ধরনের গুজব খুবই ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। নিজের ফেসবুক- টুইটার একাউন্ট থেকে এ ধরনের গুজবভিত্তিক কোন সংবাদের লিংক শেয়ার করবেন না। অন্য কোন জায়গার ছবি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ছবি বা ভিডিও উল্লেখ করে পোস্ট করবেন না। এতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল প্রভাবশালী ও উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে ভুল বার্তা যেতে পারে।

 

■ ঢ. বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। নানা জাতি-বর্ণে বৈচিত্র্যময় দেশ। রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বসবাসকারী রাখাইন, মারমা, বৌদ্ধদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে বা লঙ্ঘিত হয় এমন প্রচারণায় কখনো জড়াবেন না। কোন অপতৎপরতা চোখে পড়লে প্রতিবাদ করবেন। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন।

 

■ ণ. রোহিঙ্গারা বংশপরম্পরায় জন্মসূত্রে আরাকানের বাসিন্দা এবং সেখানকার ভূমিপুত্র। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত সরকার ‘বাঙালী’ করে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, বিতাড়ন করছে। বাংলাদেশ মানবিক কারণে সাময়িকভাবে আশ্রয় দিতে পারে কিন্তু চিরদিনের জন্য জায়গা দিতে পারে না। বাংলাদেশ এমনিতেই জনসংখ্যার চাপে নানামাত্রিক অসুবিধার মধ্যদিয়ে সামনে এগোচ্ছে। তাই তাদের আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে আপনাদের প্রচারণা যেন এমন না হয়, মিয়ানমার বা অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো ধরে নেয় বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার পক্ষে রয়েছে। আপনার প্রতিটি প্রচারণায়, দাবি উত্থাপনে এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখুন।

 

■ ত. রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের বাসিন্দা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের সেখানেই ফেরত নিতে হবে। এ বিষয়ে সোচ্চার থাকুন। ব্যক্তিগত অবস্থান, সাংগঠনিক অবস্থান বা গ্রুপ করে আপনার পক্ষে যতটা সম্ভব এ ব্যাপারে সরব হোন। আপনাকে মনে রাখতে হবে আমাদের প্রচারণা যেন বিশ্বদরবারে ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে। সে জন্য যথা সম্ভব ইংরেজিতে আপনার পোস্ট ও স্টাটাস লিখুন। ইংরেজিতে প্রকাশিত হৃদয়গ্রাহী সংবাদ, কলাম, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের পক্ষে বিদেশী সাংবাদিক, কলামনিস্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের লেখা শেয়ার করুন। শেয়ার করার সময় ‘হ্যাশ’ ট্যাগ দিন।

 

■ থ. বিদেশী গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের রোহিঙ্গা উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন, তাদের মানবেতর জীবন, বাংলাদেশের বাস্তব অসুবিধাগুলোর ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলেন। দেশি-বিদেশী সাংবাদিকদের সঠিক ঘটনা ও তথ্যগুলো সরবরাহ এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপালনে সহযোগিতা করুন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ জরুরি। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীরাও এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালাতে পারেন।

 

■ দ. রোহিঙ্গারা এখন দুনিয়ার সবচেয়ে মজলুম জাতিগোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া কোন প্রচারণা চালাবেন না। তাদের ব্যাপারে মানবিক হোন। রোহিঙ্গারা আরাকানে বসত করেন কয়েক শতাব্দী ধরে। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ মানেই আরাকান রাজসভার ঐতিহ্য। নাগরিক অধিকার কেড়ে নেয়ার পর তারা মৌলিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে তারা শিক্ষাদীক্ষা ও আর্থসামাজিক মানদ-ে পিছিয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গাদের সে বিষয়গুলো ভাবনায় রেখেই বিবেচনা করুন। নাগরিক ও মৌলিক অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। নাগরিক ও মৌলিক অধিকার আদায়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ অন্যায় না। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশ স্বাধীন হয়েছে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। ধর্মভীরুতা, স্থানীয় সামাজিকতা ও অশিক্ষার কারণে রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোন আচরণ দিয়ে তাদের জঙ্গি হিসেবে প্রচার করা সঙ্গত হবে না। অধিকার আদায়ের লড়াইরত রোহিঙ্গাদের জঙ্গি হিসেবে মিয়ানমার যে প্রচারনা চালাচ্ছে তার সঙ্গে অনেক রাজনীতি জড়িয়ে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের যদি জঙ্গি হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাহলে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের জঙ্গি আখ্যায়িত করে যে কোন অপশক্তি বাংলাদেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে পারে। মানুষ হিসেবেও আমাদের বিবেচনা করা উচিত কোন জাতিগোষ্ঠীর গুটিকয় মানুষ জঙ্গি হতে পারে কিন্তু দেশটির শিশু-কিশোর, আবাল-বৃদ্ধবনিতা জঙ্গি হতে পারে না। এ ব্যাপারে প্রচারনার ক্ষেত্রে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত।

 

■ ধ. প্রবাসী বাংলাদেশীরা সেদেশের আইন মেনে সংসদ ও মিয়ানমার দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ আয়োজন করুন। আপনারা যত বেশি প্রতিবাদ করবেন রোহিঙ্গা সংকট তত বেশি আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ পাবে। আপনারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের কূটনীতিকের ভূমিকা পালন করুন।

 

■ ন. রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী ও আরাকানের ইতিহাস সম্পর্কে জানুন। রোহিঙ্গা নেতারা একসময় মিয়ানমারে সক্রিয় রাজনীতি করতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অং সানের নেতৃত্বে জাপানীদের পক্ষে এবং স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের পক্ষে যুদ্ধও করেছে রোহিঙ্গারা। প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে অনেক রোহিঙ্গা নেতাই প্রতিনিধিত্ব করেছেন মিয়ানমারের পার্লামেন্টে। দেশটির ইতিহাসে প্রথম প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত দুই নারীর একজন ছিলেন রোহিঙ্গা জোরা বেগম। রোহিঙ্গা নেতা এবং দেশটির সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুলতান আহমদের ছেলে কো নি সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীর পাশাপাশি সূ চি’র উপদেষ্টা ছিলেন। যাকে চলতি বছরের ২৯শে জানুয়ারি ইন্দোনেশিয়া থেকে ফেরার পথে রেঙ্গুন বিমানবন্দরে হত্যা করে মিয়ানমারের একজন উগ্র জাতীয়তাবাদী। সূ চি‘র পক্ষে ভূমিকা রাখায় সামরিক সরকার একজন রোহিঙ্গা এমপি শামসুল আনোয়ার হককে সামরিক সরকার ৪৭ বছর এবং তার স্ত্রী-কন্যা ও ছেলেকে ১৭ বছর করে কারাদ- দিয়েছে। ইউ নো প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একজন রোহিঙ্গা এমপি গাফ্ফার ছিলেন দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী। আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে প্রশ্ন রাখুন, রোহিঙ্গারা সেদেশের নাগরিক না হলে তারা কিভাবে সেখানে রাজনীতি করেছে, নির্বাচন করেছে, নির্বাচিত হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা ও সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে। অতএব, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের দাবি অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলাদেশের স্বার্থেই রোহিঙ্গা ও আরাকানের এসব ইতিহাস প্রচার করা প্রয়োজন।

 

লেখক: সাংবাদিক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *