চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

স্বামীকে মনের কথা বলারও সময় পাননি রোহিঙ্গা নববধূ

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-১৭ ১১:২৪:২৫ || আপডেট: ২০১৭-০৯-১৭ ১১:২৫:৩২

 

বীর কন্ঠ ডেস্ক: ফর্সা রঙের এক তরুণী (১৮)। হাতে একটি ঝুড়ি।বিধ্বস্ত চেহারা। পায়ে কাদামাটি। পোশাক-আশাক দেখেই বোঝা যায় নির্যাতনের শিকার। উখিয়ায় কুতুপালংয়ের ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে অঝড়ে কাঁদছেন এক নববধূ। নাম তার জয়নাব আক্তার (১৮)।

সামনে এগিয়ে একটু কথা বলতেই কান্নার মাত্রা বেড়ে গেল কয়েকগুন। দু’চোখে বেয়ে পড়ছে জলের ধারা। প্রতি ফোঁটা চোখের পানিতে যেন হাহাকার আর হতাশার চিহ্ন। আশে-পাশের লোকদের কাছে জানতে চাইলাম তার সম্পর্কে। তারা জানালেন নির্মম এক ঘটনা।

 

বিয়ে হয়েছে মাত্র ঘটনার ২ সপ্তাহ পূর্বে। নতুন সংসার। কিন্তু এরই মধ্যে হারালেন স্বামীকে। তার সামনেই স্বামীকে হাত-পা বেঁধে গুলি করলো মিয়ানমারের সেনারা। গুলি করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। গলাও কেটে ফেললো। তারপর নববধূকে মৃত স্বামীর লাশের পাশেই নিযার্তন করলো তারা।

 

তরুণীটি একটু স্থির হতেই জানতে চাইলাম সেদিনের ঘটনা। ঘটনার বর্ননা দিয়ে তিনি জানান, সেদিন কয়েকজন অস্ত্রসহ এসে জ্বালিয়ে দিলো তাদের ঘর-বাড়ি। এরপর তার স্বামী মোঃ ইলিয়াছকে (২৫) বেঁধে টেনে নিয়ে গেল গাছের নিচে। তার চোখের সামনেই প্রথমে পায়ে তারপর বুকে গুলি করলো সেনারা। এরপর এলো তার পালা। কয়েকজন আর্মি মিলে স্বামীর লাশের পাশেই নির্যাতন করলো।

 

জয়নাবের সংসার মাত্র ১৪ দিনের। নতুন পৃথিবীটা সাজাতে চেয়েছিলেন নিজের মতো করে। তার সেই স্বপ্নের কথা বলতে চেয়েছিলেন স্বামীকে। কিন্তু তা আর হলো না বলা। এলাকা জুড়ে মিয়ানমার আর্মিদের ভয়াবহ তান্ডব। এর মধ্যেই হয়ে গেছে বিয়ে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়তো থাকবে না বেশিদিন। তখন সুখে সংসার করা হবে। এমন আশাই দেখছিলেন জয়নাব। কিন্তু সবই দুঃস্বপ্ন। স্বামীকে নিজের মনের কথা বলা আর হলো না তার। ছোট ছোট স্বপ্ন-ইচ্ছের কথাও জানানো হলো না প্রিয় মানুষটাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *