চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin

আনন্দ বাঁশিতে বেদনার সুর, ফের এসো মা

প্রকাশ: ২০১৭-১০-০১ ০২:০১:২২ || আপডেট: ২০১৭-১০-০১ ০২:০১:২২

বীর কন্ঠ ডেস্ক : মা উমা দেবী চলে যাচ্ছে আজ। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে দেবীকে বিদায়ের পালা। দেবীর উদ্দেশ্যে ভক্তদের নিবেদন যেন— ক’টা দিনের জন্য এলে। আনন্দে জগৎ মাতালে। তোমার আলোকচ্ছটায় সুচি হলো ধরা।

 

তোমার আগমনে পাড়া-মহল্লায় যেন চাঁদ-তারাও নেমে এসেছিল। তোমার ভক্তকূলে সঙ্গ দিয়ে নেচেছিল চাঁদ-সুরুজও। আর সেই তুমিই নাকি আঁধার নামালে বিদায়কালে! ভক্তকূলের মতো ঝুম বৃষ্টির এই দিনে বিষণ্ন ছিল প্রকৃতিও।

 

তুমি তো যাবেই। তোমার পথ রুদ্ধ করে এমন সাধ্য কার! হিমালয় দেশে তোমার বাস। যাবে তো সেখানেই। তাই বলে এত তাড়া! যে বোধনে অগ্নি দিয়ে পবিত্র হয়েছে ভক্ত মন, এক মুহূর্তেই তা আড়াল হয় কী করে!

 

এবারের আনন্দবংশীতে বেদনার সুর বেজেছিল নবমীর ঊষালগ্নেই। শারদ আকাশ কাঁদছে সে বেলা থেকেই। সে কান্না আর যেন থামলই না। মায়ের বিদায়ে দশমীতে আকাশের রাগ, ক্ষোভ যেন ফেটে পড়ল। জল ঢালছে কান্নার তালে এখনও।

 

মায়ের বিদায়ে বারিধারা ঝরেই। তবে দিন-ক্ষণ বুঝে বৃষ্টিবেলার মানেও থাকে ভিন্ন ভিন্ন। নবমীর বৃষ্টিবেলা মন কাঁদালেও আনন্দও মেলে ক্ষণে ক্ষণে। নবমীর দিন মন আর ঘরে থাকে না। হোক না তুমুল বৃষ্টি। মন কী আর বেঁধে রাখা যায়! নবমীর দিন-রাতেই মহোৎসবের তুঙ্গলগ্ন। তাই ঘটেছিল গতকাল নবমীতে। তুমুল বৃষ্টি অপেক্ষা করেই ভক্তরা উম্মাদ বনে যায় মণ্ডপে মণ্ডপে। নেচে-গেয়ে আনন্দ ডানা মেলে ধরে ছোট-বড় সকলেই্।

 

এমন আনন্দধারা কাটতে না কাটতেই বেদনার অশ্রুধারায় ভক্তের আকাশ কালো হয়ে উঠল। দশমীর মেঘলা আকাশই যেন আজ ভক্ত মনের বেদনার জানালা। যে জানালা দিয়ে শুধু মায়ের চলে যাওয়াই দেখতে হয়, মাকে ফেরাতে আর ডাকা যায় না। অপেক্ষার সেই জানালায় বসেই একটি বছরের প্রহর গুনতে হয়।

 

বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আজ দিন ভর চলল ঠাকুর দেখার পালা। গগননন্দিনী উমা আজ কৈলাসে ফিরবেন বলে সকাল থেকেই পূজা মণ্ডপগুলোয় তিলধারণের ঠাঁই হয়নি। ঢাক আর কাঠির মাখামাখিতে ধরণী যেন কেঁপে কেঁপে উঠল।

 

এরই মাঝে আচমকা বেজে ওঠে মা বিদায়ের বিষাদধ্বনি। বিজয়াদশমীর সুর মাখা সে বিষাদে। বারোয়ারি পূজারে এই দিনে সিঁদুর খেলা চলছে মণ্ডপ থেকে বাড়ির উঠোনে। সিঁদুরে রাঙ্গা হচ্ছে ত্রয়োস্ত্রীর কপাল। আর ধান-দুর্বায় বিদায় জানিয়ে বলছে, ফের এসো মা।

 

১৯ সেপ্টেম্বর মহালয়াতে নৌকায় চড়ে মর্ত্যলোকে এসেছিলেন দুর্গতিনাশিনী দেবী। মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমীর সকল আনুষ্ঠানিকতা ও পূজা আর্চনার পর পালিত হল বিজয়া দশমীর সকল আনুষ্ঠানিকতা।

 

মহালয়ার দিন শুরু হয়েছিল দেবীপক্ষ। আর ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হয় পাঁচ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।

 

সারাদেশে এবার ৩০ হাজার ৭৭টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৩৯৫ টি।-

জাগো নিউজ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *