কাইছার হামিদ
প্রকাশ: ২০১৯-১০-০৩ ১৬:০৫:০৮ || আপডেট: ২০১৯-১০-০৩ ১৬:০৫:১৭
কাইছার হামিদ: একঝাঁক স্বপ্নবাজ মানুষ সংকল্পবদ্ধ অটিজম শিশুদের আধুনিক শিক্ষা ও সেবায় গড়ে তুলবেন। গঠন করলেন উই কেয়ার ফাউন্ডেশন। উই কেয়ার ফাউন্ডেশনের হাল ধরলেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও আল্লামা ফজুল্ল্যাহ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রিজিয়া রেজা চৌধুরী।
রিজিয়া রেজা চৌধুরী মনে করেন জন্মের স্বার্থকতা, মানবকল্যাণে কাজ করতে পারা। তাই তিনি নিরলসভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও দায়িত্ব নিলেন অটিজম শিশুদের গড়ে তোলার। উই কেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তিনি। উই কেয়ার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হলো আবাসিক সুবিধাসহ উই কেয়ার অটিজম স্কুল। এ বছর ১ আগস্ট উই কেয়ার অটিজম স্কুলের যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায়।
উই কেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রিজিয়া রেজা চৌধুরী বলেছেন, অটিজম শিশুদের গড়ে তোলার জন্য বর্তমানে নানা প্রযুক্তি রয়েছে। আধুনিক শিক্ষা ও সেবার মাধ্যমে অটিজম শিশুদের গড়ে তুলতে এ ধরনের ব্যবস্থার সুষ্ঠু প্রয়োগ ও চর্চা দরকার। এ সব দিক লক্ষ্য রেখেই মনোরম পরিবেশে উই কেয়ার অটিজম স্কুলের যাত্রা শুরু করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী চট্টগ্রাম ও আশেপাশের এলাকার অটিজম শিশুদের জন্য এটি একটি নিরাপদ ও আদর্শ স্কুল হয়ে থাকবে।
উই কেয়ার ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মীর মেশকাতুন নূর, ফাউন্ডেশনের দপ্তর সম্পাদক হাবিবা নাজনীন চৌধুরী, সহ-দপ্তর সম্পাদক নঈমুননেছা আক্তার, নির্বাহী সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তাদের আহবান, সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য অটিজম শিশুদের অবহেলা না করে উই কেয়ার অটিজম স্কুলে যেন ভর্তি করা হয়।
অটিজম শিশুরা সামাজিক ও পারিবারিক আচরণে দূর্বল হয়, এইটা কোন রোগ নয়।অটিজম আক্রান্ত শিশুদের আচার-ব্যবহার এবং সংবেদন পদ্ধতি অন্যদের চেয়ে অনেক আলাদা হয় এবং আক্রান্তদের মধ্যেও থাকে অনেক পার্থক্য।
ধ্যান, মানসিকশক্তি,শব্দ, আলো, স্পর্শ ইত্যাদি ছদ্মরুপগুলোর প্রতি আচরণ সাধারণদের থেকে বেশ পৃথক ও অদ্ভুত। শারীরিক দিক দিয়ে সাধারণদের সাথেও কোন পার্থক্য করা যায় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, দেশে গত বছর পর্যন্ত ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৩০ প্রতিবন্ধী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুর সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার ৮৮৩। শতকরা হিসাবে ২ দশমিক ৮৭ ভাগ অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু। এসব শিশুর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে। এ বিভাগে ১১ হাজার ৬৯৫ শিশু শনাক্ত হয়েছে। এর পরেই রয়েছে ঢাকা বিভাগ। এখানে আছে ৮ হাজার ৮০৬ শিশু।
গুগুলে চার্জ করে জানা যায়, অটিজম শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ আউটোস থেকে। অর্থাৎ আত্ম বা নিজ। বিশেষ ধরনের স্নায়ুবিক (ডিসঅর্ডার অব নিউরাল ডেভেলপমেন্ট) সমস্যাই হলো অটিজম। অটিজম একটি মানসিক বিকাশগত সমস্যা; যা সাধারণত জন্মের পর প্রথম ৩ বছরের মধ্যে প্রকাশ পায়। বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ মনে করেন, জিনগত ত্রুটির কারণে অটিজম হতে পারে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভ্যাস, বাচ্চার অন্ত্রের পরিবর্তনগত সমস্যা, মার্কারির (পারদ) বিষক্রিয়া, বাচ্চার ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পরিপাক করতে না পারা এবং টিকার প্রতিক্রিয়ায় অটিজম হয়।
মোট কথা, অটিজম প্রতিরোধে চাই পরিবারের সহযোগিতা। এটি মস্তিষ্কের সমস্যা। শিশুকে ভালো রাখার জন্য টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল বা ল্যাপটপে গান শোনান অনেকে। তখন ওরা খুব খুশি থাকে। কিন্তু আসলে এটি একমুখী পথ। সামাজিকতা মানে কিন্তু দ্বিমুখী পথ। এ বিষয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। অনেক সময় দেখা যায়, বাবা-মা দুইজনই বাইরে থাকেন। তখন শিশুটি হয়তো কাজের মানুষের কাছে থাকে। অথবা দাদা-দাদির কাছে থাকে। তারাও বাচ্চাকে শান্ত করার জন্য হয়তো টিভির সামনে বসিয়ে দিয়ে চলে যান। এটা ঠিক নয়। শিশুকে সঙ্গ দেয়া উচিত।