চট্টগ্রাম, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin

সৌদিতে করোনায় প্রাণ গেলো এক ডাক্তারসহ তিন রেমিটেন্স যোদ্ধার

প্রকাশ: ২০২০-০৪-০১ ১১:১০:৩১ || আপডেট: ২০২০-০৪-০১ ১১:১০:৩৫

খলিল চৌধুরী, সৌদি আরব প্রতিনিধি|

বিশ্ব কাঁপানো করোনা ভাইরাসে সৌদি আরবের মদিনায় প্রাণ গেলো একজন প্রবীণ ডাক্তার-সহ তিন বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধার।

বিষয়টি জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের আইন সহকারী মুমিনুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেন, আমরা এই পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নিশ্চিত হয়েছি । যে তিন জন নিশ্চিত হয়েছি মারা গেছেন তাদের মধ্যে একজন ডাক্তার ও একজন মদিনা আল সোলায়মান ফাহাদ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন অন্য জন মদিনায় মার্কেটে চাকরি করতেন।

যারা মারা গেছেন তারা হলেন, মদিনা একটি হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার আফাক হোসেন(৫৮), কোরবান আলী(৫৪) ও মোহাম্মদ হাসান (৩৮)।

ডাক্তার আফাক হোসেন সহ-পরিবারের সৌদি আরবে মদিনায় সাফা আল মদিনা বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন, তিনি সৌদি আরবের মদিনা শরীফের আওয়ালি এর সাথে আল যুযান নামক স্থানে থাকতেন।

ডা: আফাক এক আফগানিস্তানের লোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তার এর চেম্বারে আসলে উনি ঐ লোকের চিকিৎসা করেন, ধারণা করা হচ্ছে ঐ লোকের মাধ্যমে তার শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে

ডাক্তার আফাক হোসেন ৩১-মার্চ সকালে মদিনায় একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। ডাক্তার আফাকের বাড়ি নড়াইল জেলার সদর থানার আমজাদ হোসেনের ছেলে।

দ্বিতীয় জন হলেন, কোরবান আলী মদিনার সোলায়মান ফাহাদ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় নিয়ে হাসপাতালে যান পরে পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। গত ২৪শে মার্চ মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মদিনার আল জাহরা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত কোরাবান আলীর বাড়ি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার সাদাপুর পূরান গ্রামের রেজাউল করিম এর ছেলে।কোরবান আলীর বিষয়ে মদিনার আল জাহরা হাসপাতাল থেকে সোমবার বাংলাদেশের জেদ্দা কনস্যুলেটকে জানানো হয়েছে। তবে তার কোনো আত্মীয়স্বজন এখন পর্যন্ত জেদ্দা কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে জেদ্দা কনস্যুলেট উইং একটি চিঠি পাঠিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করেছে। বাংলাদেশ কনস্যুলেট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

তৃতীয় জন হল মোহাম্মদ হাসান, বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার, লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাকফিরানী দূর্লুবের পাড়া নিবাসী আলহাজ্ব লিয়াকত আলীর পুত্র।মৃত মোহাম্মদ হাসানের ছোট ভাই মোহাম্মদ হেলাল খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, আমার বড় ভাই মদিনা আল তাইবা মার্কেটে কাজ করতেন। করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকায় তিনি তার বন্ধুর বাসায় মদিনা থেকে একটু দূরে খামারে বেড়াতে যান সেখানে সর্দি কাশি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ভর্তির তিন দিন পর করোনাভাইরাস সনাক্ত হলে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকেন তিনি। কিন্তু গত ছয় দিন থেকে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে, পড়ি তারপর শুনলাম আজ ৩১-মার্চ মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মদিনার একটি সরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

প্রসঙ্গত সৌদি আরবে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫৬৩ জন এর মধ্যে মারা গেছেন ১০জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৬৫ জন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *